| শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
ঢাকা, ১২ এপ্রিল: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, দ্রুত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দিন যত গড়াবে ক্ষতির পরিমাণ ততো বৃদ্ধি পাবে। নয়তো করুণ পরিণতির জন্য আপনারাই দায়ী থাকবেন। তখন কারো কিছুই করার থাকবে না। জনগণের ধৈযের্র বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর শ্রমিক দলের ৬ষ্ঠ সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারকে গণতন্ত্র হরণকারী উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। ৫ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। ওই নির্বাচনে ৯৫ ভাগ লোকের সমর্থন ছিল না। সংসদে জনগণের কোন প্রতিনিধি নেই। সংসদে দেশের স্বার্থ নিয়ে কোনো কথা হয় না। জনগণের টাকা নষ্ট করে শুধু ঝগড়া আর গালি-গালাজ করা হয়।
রাজপথে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে বলে উল্লেখ করেন বেগম খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া বলেন, অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা বুঝতে পেরেছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কখনো ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তাই মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। এর আগেও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই অবস্থা করেছিল বলেই ২১ বছর মানুষ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভয় পাবেন না। সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। আওয়ামী লীগ আজ একা। ১৪ দলে কোন দল নেই, ছিল শুধু জাতীয় পার্টি। কিন্তু এরশাদের বেঈমানির কারণে জাতীয় পার্টিও আজ টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। সবাই তার দল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তার কিছু করার ক্ষমতা নেই।
প্রশাসন দলীয় যন্ত্র উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, প্রশাসনকে দলীয়যন্ত্র বানিয়ে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তাদের দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতু হয়নি।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, কাদের স্বার্থে এই দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে? কুইক রেন্টালের নামে দুর্নীতি করে সব টাকা তাদের দলীয় ও পরিবারের লোকজনের পকেট ভারি করা হয়েছে। আর এই ঋণের বোঝা চাপানো হচ্ছে সাধারণ জনগণের কাঁধে। অথচ লোড শেডিং এর কারণে মানুষ অতিষ্ঠ। কৃষি কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের জাতীয় আয়ের বড় অংশ আসে রেমিট্যান্স থেকে। কিন্তু সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অনেক দেশ আমাদের জনশক্তি নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে একের পর এক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের ৫ বছর ৩ মাসে দেশে কোনো নতুন শিল্প কারখানা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ছাত্রলীগ অস্ত্রাগার বানিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সেখানে আর লেখাপড়া হয় না। সরকারি দলের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দখল করে ভর্তি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই করছে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. রেহান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি নজরুল ইসলাম খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সভাপতি নুরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান সারোয়ার, শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী প্রমুখ।
Posted ১৭:১০ | শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin