বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেরপুর মুক্ত দিবসে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পাতাকা উত্তোলন

শাহরিয়ার মিল্টন   |   বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

শেরপুর মুক্ত দিবসে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পাতাকা উত্তোলন

শেরপুর : ৭ ডিসেম্বর শেরপুর মুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর অঞ্চলকে শত্র“ মুক্ত করেন। এইদিন মিত্র বাহিনীর পুর্বাঞ্চলীয় সর্বাধিনায়ক প্রয়াত জগজিৎ সিং অরোরা শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে হাজারো জনতার এক স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন। সেসঙ্গে তিনি মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পাতাকা উত্তোলন করেন।

শেরপুর সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৩০-৪০ টি খন্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এসব যুদ্ধে বিরত্ত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৫৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭ জন, শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে ৩৯ জন এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ৪১ জনসহ মুক্তিকামী বহু মানুষ শহীদ হন।

১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী শেরপুর শহরে প্রবেশ করে বিভিন্নস্থানে গড়ে তুলে ঘাটি। শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার আহম্মদনগর উচ্চবিদ্যালয়সহ বিভিন্নস্থানে গড়ে তোলা ঘাটিতে চলে তাদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ । এসব ঘাটিতে রাজাকার, আলবদর আর দালালদের যোগসাজসে হানাদাররা চালাতে থাকে নরহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের নৃশংস ঘটনা। অন্যদিকে স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা আঘাত হানতে থোকে শত্র“ শিবিরে। নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই এ জেলায় শত্র“ সেনাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যেতে থাকে। ১১ নং সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তাহের বেশ ক’বার কামালপুর দুর্গে আক্রমণ চালান। ১১ দিন অবরোধ থাকার পর ৪ ডিসেম্বর এ ঘাটির পতন হয়।

মোট ২২০ জন পাক সেনা এবং বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার, মিলিশিয়া ও রাজাকার সদস্য বিপুল অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে। কামালপুর মুক্ত হওয়ার পর হানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়ে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধারা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় শেরপুরে হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। কামালপুর দুর্গ দখল হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাক বাহিনীর সকল ক্যাম্প ধ্বংস হয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের মূহুমূহু আক্রমান ও গুলি বর্ষনের মুখে পাকসেনারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আধারে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এরপর ৭ ডিসেম্বর শত্র“ মুক্ত হয় শেরপুর। জাতীয়ভাবে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপিত হলেও এই দিনটি শেরপুর জেলা বাসীর জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:২৯ | বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(729 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com