| মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
শেখ হাসিনা দেশে বিচারের সংস্কৃতি ফিরে এনেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেছেন, আজ যারা বিচার চান তারাই একসময় বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন। শেখ হাসিনার বদৌলতে দেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসেছে। আজ যারা মানবতার কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, ন্যায়বিচারের কথা বলেন, তারাই সব বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন। আইন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করা হয়েছিল। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত করা হয়েছিল, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে প্রমোশন দেওয়া হয়েছিল। সেদিন কিন্তু কোনো মানবতা বা গণতন্ত্র কাজ করেনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সংগ্রাম করে বিচারের যাত্রা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মধ্য দিয়ে আবারও বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ বের হয়ে আসে। অন্যদিকে দেশে বিচারহীনতার যাত্রা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনার জন্মদিন এক লেখক সম্মিলনের মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, এমন আশা প্রকাশ করে হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। শেখ হাসিনার দক্ষতা, মেধা ও নেতৃত্বের কারণেই আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন কিন্তু দৃশ্যমান। আজকে ঢাকা শহরে মেট্রোরেল হচ্ছে, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতু, আমাদের পায়রা সমুদ্রবন্দর হচ্ছে। নানা উন্নয়নে কিন্তু দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান হলে অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয় দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা ছিয়াত্তর জন কবির কবিতা নিয়ে শেখ হাসিনাকে নিবেদিত কবিতা সংকলন এবং তারুণ্যে উদ্দীপ্ত লেখকদের উৎসর্গ করা চারশো কবির ‘নবযাত্রা ও অগ্রযাত্রা’ নামক দুটি কবিতা সংকলন।
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর দেশ শাসনের ভয়াবহতা তুলে ধরে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সবাই জানে ১৯৭০ সালে গ্রাম-বাংলার অবস্থা কী ছিল। তখন গ্রামের মানুষ দুবেলা খেতে পারতো না, আমরা তা দেখেছি খুব কাছ থেকে। দুবেলা খাওয়া কঠিন ব্যাপার ছিল। সাধারণ মানুষের গায়ে ঠিকমতো কাপড়ও থাকতো না। গ্রামের মা-বোনদের দেখতাম তালি দেওয়া কাপড় পরতে। তখন এতটাই দরিদ্র দেশ ছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী আমাদের দরিদ্র বানিয়ে রেখেছিল।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সেই বাঙালিকে সঙ্গে নিয়ে একটা আত্মমর্যাদাশীল দেশ গঠনের যাত্রা শুরু করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশ। মাত্র সাড়ে তিন বছরে মাথাপিছু আয় ছিল ৩৭৮ মার্কিন ডলার। পরবর্তীকালে জিয়া-এরশাদ সরকার তা ৩০০ এর নিচে নামিয়ে আনে।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে হানিফ বলেন, যেদিন শেখ হাসিনা দেশে এলেন সেদিন পরিবেশ ছিল অন্যরকম। লাখো মানুষ বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিল। প্রকৃতিও ছিল বৈরী। সব নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে রানওয়ে পযর্ন্ত মানুষ গিয়েছিল। মানুষের আবেগ ছিল অন্যরকম। দুঃশাসন থেকে বাঁচতে মানুষ শেখ হাসিনাকে বেঁচে নিয়েছিল। তাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। গ্রেনেড হামলা করা হয়। সাবেক রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী আইভি রহমানসহ ৩৪ জন সেই হামলায় প্রাণ হারান। শেখ হাসিনাও আহত হন।
তিনি আরও বলেন, কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে যেতে হয়। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে তিনি তার বাবা-মাকে খুঁজে পেতে চান।
বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে সভার উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কবি আজিজুর রহমান আজিজ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কবি মারুফুল ইসলাম, কবি শ্যামসুন্দর সিকদার, আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি, কবি শেখ রবিউল হক, অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সমন্বয়ক মীনা আবেদিন প্রমুখ।
এসময় মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কবি ও প্রাবন্ধিক কামরুল ইসলাম।
Posted ১৭:১২ | মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain