এম এম হারুন আল রশীদ হীরা; নওগাঁ : নওগাঁর পোরশার বড় গুদইল দাখিল মাদরাসার ইবতেদায়ী মৌলভী তবিবুর রহমানের (৪১) বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়া নারীর সাথে প্রাক্তন এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে তার নিজ বাসায় অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে। তার এই অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য গত ২০ আগস্ট এলাকাবাসী ও গত ২১ আগস্ট ওই মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীগণ মাদরাসার সুপার ও সভাপতি বরাবর পৃথকভাবে দুটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন।তাদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন মাদরাসার সুপার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদরাসায় কর্মরত ইবতেদায়ী জুনিয়র মৌলভী তবিবুর রহমান গত ১৮ আগস্ট দিবাগত রাতে তার নিজ বাড়িতে বহিরাগত এক দেহ ব্যাবসায়ী নারীর সাথে তার প্রাক্তন ছাত্রসহ একত্রে পালাক্রমে সহবাস করেন। এঘটনা গ্রামের কিছু লোক জানতে পেরে তার বাড়ি পাহারা দেয় এবং তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় এলে সেই নারীসহ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং বেশকিছু লোকজনের উপস্থিতিতে ওই নারীসহ তার স্বীকারোক্তি মৌখিক ভাবে শুনে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে এলাকাবাসি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগন আতংকিত হয়ে পড়েন। কারণ সে ইতোপূর্বে তার এক ছাত্রীকে মাদরাসার শ্রেণী কক্ষে প্রাইভেট পড়ানোর সময় একা পেয়ে ফুসলিয়ে তার সাথে শাররীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে অবস্থায় এক গ্রামবাসি তাদের দুই জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেললে গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে গ্রামবাসী তাদের দুজনের বিয়ে দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করেন। এছাড়া আরও দুই বার সে নারী কেলেংকারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটায়। কিন্তু সে অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে সব প্রমান লোপাট করে। উপযুক্ত প্রমানের অভাবে সে এ পর্যন্ত চাকুরী করে চলেছেন বহাল তবিয়তে।
তারা অভিযোগে আরও বলেন, এই কুলাঙ্গার চরিত্রহীন শিক্ষক এ মাদরাসায় থাকলে ভবিষ্যতে তাদের মেয়েদের সাথেও এইরুপ (ধর্ষনের) ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি আমাদের ছেলেদেরও নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় ঘটবে। যতদিন ওই শিক্ষক মাদরাসায় থাকবে ততদিন আমাদের পক্ষে আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে এ মাদরাসায় পাঠানো আর সম্ভব নয়। তাই তারা ওই শিক্ষকের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন (চাকুরীচ্যুত) করার জন্য আবেদন ও দাবি করেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তাসহ শিক্ষার সুষ্ট পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্যও অনুরোধ করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইবতেদায়ী জুনিয়র মৌলভী তবিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। এসব অভিযোগ অসত্য। এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে সাংবাদিককে নানাভাবে অনুরোধ করেন। অভিযোগ প্রাপ্তি ও শোকজের সত্যতা নিশ্চিত করে মাদরাসার সুপার নুরুজ্জামান বলেন, এলাকাবাসী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ পাওয়ার পর আগামী ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলে গত সোমবার (২৯ আগস্ট) তাকে শোকজ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাদরাসার সভাপতি সাদেকুর রহমান বলেন, এই শিক্ষক এর আগেও এরকম অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়েছে। এবারে এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরার পরে লিখতভাবে অভিযোগ দিলে তাকে শোকজ করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়েজেদ আলী মৃধা এ বিষয়ে বলেন, এ ঘটনাটি আমি সুপার সাহেবের কাছে শুনেছি। তাকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জাকির হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
Like this:
Like Loading...
Related