শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘র‍্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে কোণঠাসা’ হয়ে বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ কুখ্যাত ২০ জলদস্যুর আত্মসমর্পন

  |   সোমবার, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট

‘র‍্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে কোণঠাসা’ হয়ে বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ কুখ্যাত ২০ জলদস্যুর আত্মসমর্পন

সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যু ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে র‍্যাব-৮ । তারই ধারাবাহিকতায়  সুন্দরবনের কুখ্যাত এবং সর্ববৃহৎ জলদস্যু  “জাহাঙ্গীর বাহিনীর” প্রধান মোঃ জাহাঙ্গীর ওরফে শিকারী (৩৮)’সহ ২০(বিশ) জন সক্রিয় সদস্য আজ বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পন করে র‍্যাব-৮ এর কাছে ।

র‍্যাব এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, সুন্দরবনের প্রতিটি নদী ও শাখা জুড়ে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনীর অবিরাম টহল এবং অনমনীয় মনোভাবের ফলে জলদস্যু/ডাকাত দলগুলোর কার্যক্রম কোনঠাসা হয়ে পড়ে এবং তাদের অপরাধসীমা প্রায় শূণ্যের কোটায় চলে আসে। বিভিন্ন জলদস্যু বাহিনী র‌্যাব এর হাতে নিস্ক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি র‌্যাব-৮ এর ক্রমাগত একাধিক কঠোর অভিযান, অতি সক্রিয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক এবং কৌশলগত পদক্ষেপের কারণে কোনঠাসা হয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে। তারা অনুধাবন করে অধিক অর্থ উপার্জন ও কুপ্ররোচনার স্বীকার হয়ে তারা ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব -৮ জানিয়েছে, ডাকাত বাহিনী তাদের  নিজ অপরাধ বুঝতে পেরে স্বপ্রনোদিত হয়ে তাদের কাছে থাকা সমস্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আইনের কাছে নিজেদেরকে সোপর্দ করতে ইচ্ছা পোষণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৮, সুন্দরবনের শরণখোলা এবং চাঁদপাই রেঞ্জে ২৭ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখ হতে জলদস্যু/বনদস্যু বিরোধী বিশেষ অভিযান আরম্ভ করে। ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখ সুন্দরবন এর আওতাভুক্ত শরণখোলা রেঞ্জের অন্তর্গত বলেশ্বর নদীতে আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনাকালে জলদস্যু/ডাকাত “জাহাঙ্গীর বাহিনীর’’ সদস্যগণ বিশ্বস্ত সূত্র এর মাধ্যমে আভিযানিক দলের কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করে এবং বলেশ্বর নদী সংলগ্ন কাটেশ্বর খালের ভিতর গহীন জংগলে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে।

জলদস্যু বাহিনী প্রধান এ সময় বিশ্বস্থ সূত্র মারফত জানায় উক্ত চলমান অভিযানে তারা কোনঠাসা অবস্থায় পড়ে গেছে এমতাবস্থায় তারা র‌্যাবের নিকট নিঃশর্ত আত্মসমর্পন করতে চায়। সেই সুত্রে র‍্যাবের আভিযানিক একটি দল দলটি  উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে কাটেশ্বর খালের নিকট পৌঁছালে খালের প্রবেশ মুখ হতে অনুমান ১০০০ গজ দক্ষিন দিকে পূর্ব পাড়ে কয়েকজন লোককে দাড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যায়।

দাড়িয়ে থাকা লোকদের নিকট পৌঁছালে তারা বনের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে আভিযানিক দলের সামনে হাত উঁচু করে করে দাঁড়িয়ে থাকে এবং নিজেদেরকে বনদস্যু/ডাকাত কথিত “জাহাঙ্গীর বাহিনীর’’ সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে আভিযানিক দলকে জানায় যে, তাদের ব্যবহৃত কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ বনের ভিতর লুকানো আছে যা তারা র‌্যাবের নিকট হস্তান্তর করতে চায়।

এরপর আভিযানিক দলটি জলদস্যুদের গ্রেফতার করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মাঝিদের নিয়ে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারের লক্ষ্যে বনের মধ্যে তল্লাশী শুরু করে। তল্লাশীর এক পর্যায়ে খালের পাড় হতে বনের মধ্যে অনুমান ১০০-১৫০ গজ ভিতরে লুকানো অবস্থায় একাধিক বস্তা, প্লাষ্টিকের ব্যাগের ভিতরে ভরা অবস্থায় বিপুল পরিমান অস্ত্র-গুলি পাওয়া যায়। উদ্ধার করা ব্যাগ ও বস্তা থেকে সর্বমোট ৩১টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং সকল প্রকার অস্ত্রের প্রায় ১৫০৭ রাউন্ড তাঁজা গুলি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে র‍্যাব-৮  । এরপর ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ বিকেল চারটা নাগাদ অভিযানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।

র‍্যাব- ৮ জানিয়েছে, ‘‘জাহাঙ্গীর বাহিনী’’ সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনের সর্বাপেক্ষা সংগঠিত এবং সক্রিয় জলদস্যু বাহিনী। এই বাহিনী সকল অস্ত্র-গোলাবারুদসহ সদলবলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পন এর ফলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন মৎস্য আহরণ সম্ভবপর হবে। বনজীবি এবং মৎস্যজীবি সাধারণ মানুষের মধ্যে এর ফলে ব্যাপক আশার সঞ্চার হবে এবং দস্যুবৃত্তিতে নিয়োজিত অন্যান্য বনদস্যু/জলদস্যুরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে দারুনভাবে উৎসাহিত হবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৭:০৫ | সোমবার, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com