| রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বরগুনার রিফাত হত্যার ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপেক্ষা করুন। জড়িত সবাই ধরা পড়বে। আমাদের কাছে অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য বিষয় নয়। অপরাধীর অপরাধই বিবেচ্য বিষয়।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে ৩ জন এজহারভুক্ত। আমাদের র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কাজ করছে। এছাড়া আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া বড় কর্মকর্তা সেখানে রয়েছেন, কারো কোনো গাফলতি দেখলে নিশ্চয়ই তারা ব্যবস্থা নেবেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের কারও গাফলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, মাদকের চেয়ে এখানে যে দৃশ্যটি আমরা দেখেছি, একটা সুস্থ মানুষ এধরনের হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে বলে আমার ধারণা ছিলো না। সে সুস্থ হোক বা অসুস্থ হোক তাকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কুপিয়ে হত্যার দৃশ্যটি সারাদেশের মানুষের মনে দাগ কেটেছে। তাই এ বিষয়ে পুলিশ কোনো গাফলতি করবে না, এটা আমার বিশ্বাস।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনা কোনো সভ্য বা সুস্থ মস্তিষ্কের কাজ নয়, অসুস্থ মানুষ, অসভ্য মানুষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাটা হটাৎ করে ঘটিয়েছে। তবে এ ধরনের ঘটনা আমরা এর আগে দেখেছি বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে। সেখানে আসামিরা ধরা পড়েছে। তাদের বিচার প্রক্রিয়াধীন। তবে যারা ছাড়া পেয়েছে তারা আইনি প্রক্রিয়ায় ছাড়া পেয়েছে। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই। যে ঘটনা ঘটিয়েছে সে এখনও বিচারাধীন।
মাদক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবকিছুর পেছনে মাদক জড়িত। মাদক এখন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। এটি একটি অবৈধ ব্যবসা, এ অবৈধ ব্যবসা চালানোর জন্য অবৈধ শক্তিরও প্রয়োজন হয়। আমাদের আইনগত কোনো দুর্বলতা নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা কাজ করছি। মাদক নিয়ে আমরা শক্ত অবস্থানে আছি।
রিফাত হত্যার আসামিদের মধ্যে সাগর পুলিশের চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়েছে, এখন তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার পুলিশের চাকরি হওয়ার সুযোগ নেই।
গত বুধবার বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হামলার পর শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভর্তির এক ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রিফাতের মৃত্যু হয়।
এদিকে শরীফকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী ধারালো দা দিয়ে একের পর এক কোপাতে থাকে রিফাত শরীফকে। এ সময় রিফাত শরিফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তাদের বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
ঘটনাটি পুলিশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় ছিল। নিহত রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হালিম দুলাল শরিফ। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে রিফাত।
Posted ২২:১৬ | রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain