শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রিজভীর অফিস বন্দি তৃতীয় ঈদ

  |   বুধবার, ০৫ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট

রিজভীর অফিস বন্দি তৃতীয় ঈদ

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ২০১৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি থেকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বন্দি। সেই থেকে ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি বাই ৩ ফুট ৫ ইঞ্চি একটি কক্ষে আড়াই ফুট বাই ৪ ফুট আট ইঞ্চি একটি খাটে বসবাস তার। ইতিমধ্যে এই দুই বছরে দুটি ঈদও কাটিয়েছেন এখানে। আসছে ঈদও কাটবে অফিস বন্দি অবস্থায়ই। দলটির সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে অঘোষিত মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করা এই সাবেক ছাত্রনেতার খাওয়া দাওয়ায় খুব একটা চাহিদা না থাকায় কার্যালয়ের স্টাফদের জন্য যে রান্না হয় তা থেকেই সেরে নেন। এবার ঈদের দিন সকালের মেন্যু সাদা ভাত, আলু ভর্তা, ডিম ভাজি ও ডাল। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসুর ভিপি থাকাকালীন সৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজশাহী রেলস্টেশনে গুলিবিদ্ধ হন।

তখন থেকেই খাবারসহ নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। তাই সব খাবার খেতে পারেন না। সাদা ভাত কার্যালয়েই রান্না হয়। মাঝে মাঝে পরিবার থেকে তরকারি আসে। এবার ঈদেও তেমনটিই হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কার্যালয়ে অবস্থানকালীন সময়ে স্ত্রী আঞ্জুমান আরা আইভী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের খুবই মিস করি। ঈদের দিন পরিবারের সদস্যরা বাসা থেকে খাবার আনে। ঘর-বাড়ি, পরিবার-পরিজন ছেড়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে পড়ে থাকা রিজভীর জীবন যেমনি কাটুক স্বেচ্ছায় অফিসবন্দি এই নেতা শুভাকাক্সিক্ষ ও সহকর্মী হিসেবে পেয়েছেন কয়েকজন বিশ্বস্ত মানুষ। এদের মধ্যে সব সময় ছায়ার মতো পাশে থাকেন আরিফুর রহমান তুষার। তার সবরকম প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করেন। বাসা থেকে রান্না করা খাবার এনেও খাওয়ানোসহ সব ধরনের প্রয়োজনে তাকেই সব সময় কাছে পান রিজভী। স্বেচ্ছায় অফিস বন্দি হওয়ার পর থেকে কোনো ঈদেই ছুটি নেননি তুষার। রিজভী বলেন, এবার ঈদে দুই একজন অফিস সহকারী ছাড়া আর সবাইকেই ছুটি দেয়া হয়েছে। জরুরী কোনো স্টেটমেন্ট দেয়ার প্রয়োজন পড়লে কাজ করার জন্য একজন কম্পিউটার অপারেটর রাখা হয়েছে। সঙ্গে রাখা হয়েছে দুই একজন কর্মচারি। বাকিরা সবাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি গেছে। ঈদের দিন অফিসেই শুয়ে বসেই সারাদিন কেটে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সাধারণত ঈদের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার তৃণমূল নেতারা দেখা করতে আসেন। তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। দলের পক্ষ থেকে কোনো স্টেটমেন্ট দেয়ার প্রয়োজন হলে সেটা দেই। আর কোনো কাজ করিনা।
বগুড়ায় জন্ম নেয়া বিএনপির এই নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষে টানা ২১ বছর ঢাকায় বসবাস করছেন। ছাত্র জীবনে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসুর ভিপি। এছাড়া, ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতিও ছিলেন তিনি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজশাহী রেলস্টেশনে গুলিবিদ্ধ হন। তখন থেকেই খাবারসহ নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া ৩৫ দিন রিমান্ডে থাকার ঘটনাও ঘটেছে এই নেতার জীবনে। গত বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ১১ দিন আগে থেকে পরিবারের সঙ্গ ছাড়া নয়াপল্টন দলের কার্যালয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি। দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে তিনি খুব ভোরেই ঘুম থেকে ওঠেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তিন তলার সংবাদ সম্মেলন কক্ষে অনেকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন। কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা করেন। রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত দিনের সময় পার হয় দলীয় কর্মকা-ে। এ ছাড়াও বড় একটি সময় পার হয় উপন্যাস আর রাজনৈতিক বই পড়ে। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার পর ১৫-২০টা মামলায় আমাকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। এর আগে ৭০টির বেশি মামলা ছিল আমার নামে। তিনি বলেন, আমি কার্যালয়ে অবস্থান করছি দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন হিসেবে। যেহেতু অনেকগুলো মামলা আছে তাই এখানে বসেই কথা বলছি। হাত এগিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দিচ্ছি না। তার পরও কার্যালয়ের সামনে পুলিশের উপস্থিতি কম দেখলে সময় সুযোগ বুঝে মাঝে মাঝে মিছিলে বের হচ্ছি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:২৩ | বুধবার, ০৫ জুন ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com