| সোমবার, ১৯ মে ২০১৪ | প্রিন্ট
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির ফলে হঠাত্ করেই ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদের থাবায় তিন দিনে ৩টি গ্রাম সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। আংশিক ভাঙনের শিকার হয়েছে আরও চারটি গ্রাম। এতে ৬০০ পরিবারের ঘরবাড়ি হারিয়ে গেছে নদের গর্ভে।
ভাঙনের মুখে রয়েছে মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নয়াচর হাটবাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদের ভাঙন থেকে ওইসব প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব এখন মাত্র ৩০০ মিটার। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের এই তান্ডব চলছে রাজিবপুর উপজেলার নয়াচর এলাকায় প্রায় চার কিলোমিটার জুড়ে। অপর দিকে কোদাল কাটি ইউনিয়নের উত্তর কোদাল কাটি ও সাজাইয়ের চর গ্রাম।গত শুক্রবার ভাঙন ঠেকানোর দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নয়াচর বাজারপাড়া গ্রামের ভাঙনের শিকার মানুষেরা আহাজারি করছে। ব্রহ্মপুত্রে বাড়ি হারানো ৭০ বছরের বৃদ্ধ বছের আলী বলেন, ‘আমার বয়সে ১৭ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। আমগো বাড়িঘর নদীতে হারিয়ে গেছে।
বাড়িঘর, জমিজিরাত সব হারাইয়া এইহানে ঘর করছিলাম। সেটাও ভাইঙা গেল। দুনিয়াত এহন কোনো জায়গা নেই। রাসত্মায় থাকা ছাড়া কোনো উপায় নাই।’ বছের আলীর মতো ১৫-১৬ বার করে ভাঙনের শিকার হয়েছেন গোলাম হোসেন, মোকবুল হোসেন, আবু হানিফ, হামিদুল ইসলাম ও হযরত আলী।
রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম ও মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু জানান, যে হারে ভাঙছে তা ঠেকানো না গেলে নয়াচর বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নয়াচর ইসলামিয়া মাদ্রাসা, নয়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাজারের এক হাজারের ওপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন প্রতিরোধে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের জানান, নয়াচর ও কোদালকাটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন প্রতিরোধে কোনো প্রকল্প নেই। তবে নদী ভাঙনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
Posted ১১:১২ | সোমবার, ১৯ মে ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin