বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যাবজ্জীবন ও ফাঁসির আসামীদের সঙ্গের ঐক্যে দেশের মানুষের উপকার করা যাবে না : বাণিজ্যমন্ত্রী

  |   মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮ | প্রিন্ট

যাবজ্জীবন ও ফাঁসির আসামীদের সঙ্গের ঐক্যে দেশের মানুষের উপকার করা যাবে না : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দলছুট কতকগুলো লোক যাবজ্জীবন ও ফাঁসীর আসামীদের দলের সঙ্গে ঐক্য করেছে। সে দলের সঙ্গে যারা ঐক্য করে তারা আর যাই হোক দেশের মানুষের কোনো উপকার করতে পারবে না।

মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটরিয়ামে বিশ্ব খাদ্য দিবসের জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। কৃষি বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিষ্ময়কর উত্থান হয়েছে । বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের অনেক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানকেও ছাড়িয়ে গেছে। মানব সম্পদ উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা তিনটি সূচকে তাদের থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং আলুতে আমরা উদ্বৃত্ত রয়েছি। কৃষির প্রতি সেক্টরে আমাদের ঈর্ষনীয় সাফল্য এসেছে। স্বাধীনতার পর ৩৪৮ মিলিয়ন ডলারের মাত্র তিনটি কৃষি পন্য পাট, চা ও চামড়া রপ্তানি হতো। বর্তমানে কৃষি পন্যের সংখ্যা ও রপ্তানি আয়ের পরিমান কয়েকগুন বেড়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পুর্তিতে রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের ক্রমাগত সমর্থনে কৃষির সকল ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। খাদ্য শস্যের ক্ষেত্রে এ প্রবৃদ্ধির হার লক্ষ্যনীয়। ১৯৭২ সালে এ দেশে খাদ্য শস্যের উৎপাদন ছিলো এক কোটি টন। বর্তমান তা বেড়ে দাড়িয়েছে চার কোটি টনেরও উপরে।

বিবিএস এর উদ্বৃতি দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের বড় তিনটি খাতের মধ্যে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাড়িয়েছে ২.৯৭ শতাংশে। ১৯৯১ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিলো ৫৬.৭ শতাংশ। বর্তমানে এ হার দাড়িয়েছে ২৪.৩ শতাংশে।
সরকার রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত রাখা, দুষনমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দেশের পানি ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষার লক্ষ্যে সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহবান জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে ঘোষনা দিয়েছিলেন ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমরা সে লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: নাসিরুজ্জামান এর সভাপতিত্তে¡ অনুষ্ঠিত সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন এফএও বাংলাদেশ প্রতিনিধি মি. রবার্ট ডি. সিম্পসন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় নেন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক নাজমা শাহীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক।

সেমিনারের আগে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি আ.কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে তিন দিনের খাদ্য মেলা উদ্বোধন করেন। সকালে বিশ্ব খাদ্য দিবসের বর্ণাঢ্য র‌্যালি জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে মেলা চত্বরে শেষ হয়। এবারের বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য “কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব” । কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও) অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০১৮ উপলক্ষে বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠান স¤প্রচার, মাসিক কৃষিকথার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার প্রকাশনা ও বিতরণ, মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহন নিশ্চিত করাসহ ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। খাদ্য মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ৪০ টি প্রতিষ্ঠানের মোট স্টলের সংখ্যা ৬৩টি। মেলা প্রতিদিন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্দেশ্য হল- ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলতঃ মহিলা ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান, প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া । উল্লেখ্য বিশ্বব্যাপি খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছে। এফএও ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ১৯৭৯ সালে এ সংস্থার ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী বিজ্ঞানী ড. পল রোমানি বিশ্বব্যাপি খাদ্য দিবস পালনের প্রস্তাব করেন। তার প্রস্তাবের পর ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটিতে (১৬ অক্টোবর, ১৯৪৫) বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে এ দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২১:৪৩ | মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com