বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৃত্যু যখন অবধারিত তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

  |   বুধবার, ১০ জুন ২০২০ | প্রিন্ট

মৃত্যু যখন অবধারিত তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের জন্য, দেশের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মৃত্যু যখন অবধারিত সেটাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ভয় পাইনি। কখনো ভয় পাবো না। আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, একদিন সে জীবন নিয়ে যাবেন। তাই এই নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।

আজ  জাতীয় সংসদে এক শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সংসদ অধিবেশনে অংশ নেয়ায় নিজের আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

এ আশঙ্কার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে মরি, গুলি খেয়ে মরি, অসুস্থ হয়ে মরি, মরতে একদিন হবেই। এই মৃত্যু যখন অবধারিত সেটাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি ভয় পাইনি। কখনো ভয় পাবো না। আমি যখন বাংলাদেশে ফিরে আসি, সেটা ছিল সেই বাংলাদেশ, যেখানে আমার মা-বাবা, ভাই, বোন, শিশু ভাইটিকে পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছিল। আমাদের পরিবারের বহুজনের সদস্য বুলেটবিদ্ধ, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বুলেটবিদ্ধ বা স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছেন।

করোনায় কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়া মানুষের জন্য সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সবার কাজ করার সুযোগ ছিল না। যারা নিয়মিত চাকরির বেতন পান তার বাইরে কিছু লোক থাকেন, যারা ছোটখাটো কাজ করে খান, ব্যবসা করে খান। এমন প্রতিটি মানুষের খবর নিয়ে তাদের ঘরে ঘরে খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। এমনকি রিকশার পেছনে যারা আর্ট করে, সংস্কৃতি কর্মী, তাদের কিছু সরকারিভাবে, কিছু আমাদের ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। আর্টিস্ট বা শিল্পী কিংবা শিল্পীদের সহযোগিতা করে যারা, তাদের কথা কেউ ভাবে না। এই ভাবনাটা কিন্তু আমার নিজের না, সত্যিকারের কথা বলতে কি- এটা শেখ রেহানার চিন্তা। সে-ই কিন্তু খুঁজে খুঁজে তাদের সাহায্য দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।

‘প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের কাছে এজন্য আলাদাভাবে ত্রাণ দিয়ে রেখেছি, যেন তারা সাহায্য পান। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা যে যেখানে আছে, যে যেটুকু পেরেছে প্রত্যেকেই সাহায্য করেছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষও সাহায্য করেছে।’

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর পর মরদেহ গ্রহণ বা লাশ দাফনের ক্ষেত্রে স্বজনদের অমানবিক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে কেউ মারা গেলে আত্মীয়-স্বজন লাশ ফেলে চলে যায়। সেই লাশটা টানে পুলিশ। তারা নিয়ে কবর দিচ্ছে, জানাজা দিচ্ছে। ভয়ে আপনজন কেউ থাকছে না। মানুষ ভীত হয়ে এরকম অমানবিক আচরণ করবে, এটাও কিন্তু দুঃখজনক। আরেকটি বিষয় আমি না বলে পারব না, যেমন আমাদের ছাত্রলীগ আমার নির্দেশে ধান কেটেছে। এমনকি এই লাশ নিয়ে এসে তাদের দাফনের ব্যবস্থা, যারা অসুস্থ তাদের হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া, সেবা-শুশ্রুষা করার কাজগুলো কিন্তু ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ করে যাচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আল্লাহ জীবন দিয়েছেন, একদিন সে জীবন নিয়ে যাবেন। আর আল্লাহ মানুষকে কিছু কাজ দেন। সেই কাজটুকু যতক্ষণ পর্যন্ত শেষ না হবে ততক্ষণ হয়তো আমি কাজ করে যাব। যখন কাজ শেষ হয়ে যাবে, সময় শেষ হবে, তখন আমি চলে যাব। তাই এই নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।

মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সরকারের তৎপরতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনার সময় অনেক দেশ বাজেট দিতে পারছে না। কিন্তু আমরা একদিকে যেমন করোনা মোকাবিলা করবো, পাশাপাশি আমরা দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করবো। তারা যেন কষ্ট না পায় সেজন্য যা যা করণীয় করে যাবো। আমি তো এখানে বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। আমি তো জীবনটা বাংলার মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতে এসেছি, এটাতে তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয়ের কী আছে?

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২০:২৩ | বুধবার, ১০ জুন ২০২০

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com