| শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৯ | প্রিন্ট
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার এ সম্পর্কের শুভ সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা মাইলফলক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ব সম্প্রীতিতে অনন্য নজির।
শনিবার (৫ অক্টোবর) ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
হাসিনা-মোদি বৈঠকে বিভিন্ন সেক্টরে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সাতটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে খুলনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইনজিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিআইপিএসডি); রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকায় বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন ও বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত এক দশকে আমাদের উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু ইকোনমি ও মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি ও সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদি খাতে উভয় দেশ সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত সরকারের আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশে নির্মিত রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ ভবন ছাত্রাবাসের শুভ উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। রামকৃষ্ণ মিশন বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন খাতের উন্নয়নেও এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ওই অঞ্চলের ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ধরনের সেবা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ভূমিকা রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিন শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিআইপিএসডিআই এ অঞ্চলের নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি রপ্তানির সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। এর ফলে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জ্বালানি চাহিদা পূরণ সহজ হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘গত এক বছরে আমি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। আজকে তিনটি প্রকল্প যোগ হয়ে এক ডজন যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। এই প্রকল্পগুলোর উদ্দেশ্য আমাদের নাগরিক জীবন মানকে উন্নত করা। এটা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল মন্ত্র।’
শীর্ষ বৈঠকের পর হায়দ্রাবাদ হাউজে শেখ হাসিনা তার সম্মানে দেওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেন।
বিকেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশটির রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল তাজমহলে এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ দেবে এশিয়াটিক সোসাইটি। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সরকারি সফরে গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি পৌঁছান। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটাই তার প্রথম ভারত সফর। তিনি ২০১৭ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ ভারত সফর করেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/
Posted ১৬:৪৭ | শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain