| শুক্রবার, ২৬ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট
মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী আড্ডাখানা’ হিসেবে জাসদ গণবাহিনী সৃষ্টি করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আজ (২৬ আগস্ট) দুপুরে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটর মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের অনুচর জিয়াউর রহমানকে ঢুকিয়ে দিয়ে, খন্দকার মোশতাকদের ঢুকিয়ে দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে চেয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ ষড়যন্ত্র শুরু করে। সেদিন আমাদের দলের ভেতরে অস্থিরতা ছিল, সেই অস্থিরতা শুভফল বয়ে আনে নাই।
তিনি বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমানরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে পারেনি। মোশতাকরা মানতে পারে নাই বলে বাংলাদেশ মুসলিম বাংলা নামে সংগঠন প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৭২ সালে। এরা সারাদেশে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। সেসময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। সেদিন বিভাজনের মধ্য দিয়ে গণবাহিনী তৈরি করা হয়েছিলো।
ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে সত্য কথা আমাকে বলতেই হবে। সেদিন জাসদ সৃষ্টি, গণবাহিনী সৃষ্টি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছিল। সেদিন আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার করা হয়েছিল।
বামজোটের হরতাল দেশের জনগণ ‘টের পায়নি’ উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। তখন কিছু অপশক্তি মাঠে নেমেছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জনগণের মাঝে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, আজকে একটি অপশক্তি মাঠে নেমেছে আমাদের বিরুদ্ধে। গতকাল একটি হরতাল পালন হয়ে গেল বাংলাদেশে, কেউ টের পেল না। রাস্তায় যানজট ছিল।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নানক বলেন, আমাদেরকে খুব সর্তক হতে হবে। ওরা আবার নেমেছে। ওরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিবে না। সে কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা নেমেছে।
নানক বলেন, আপনারা পাকিস্তানি প্রেসক্রিপশনে চলছেন। এদেশে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা হয়েছে, কোথায় ছিল মানবতা? এই দেশে ৭৫ এ ১৫ আগস্ট হত্যার পরে সুশীল সমাজরা কথা বলেনি, তাদের প্রতি ধিক্কার দেই। তারা আজকে বড়-বড় কথা বলে। আজকে সেই সুশীলদের বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে। আর জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেদিন হালবিহীন নৌকা পরিচালনার আত্মিক ও মানসিক শক্তি কেউ দেখাতে পারেনি। আমি কাউকে ছোট করতে চাই না তবে বলতে চাই আওয়ামী লীগের কর্মীরা কখনও মাথা নোয়ায় না। কর্মীরাই এসে হাল ধরে এটা তারা বার বার প্রমাণ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী, পরাজয়ের গ্লানি চিরস্থায়ী। এই পরাজয়ের গ্লানি মোচন করা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার জন্য ৭১ এর পরাজিত শক্তি জাতির পিতাকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর প্রথম স্বপ্ন ছিল এদেশের স্বাধীনতা। দ্বিতীয় স্বপ্ন ছিল এদেশের মানুষের মুক্তি। তাই স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই তিনি অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামের ডাক দেন।
তিনি আরও বলেন, সবুজ বিপ্লবের কর্মসূচি শুরু করেন। তখনই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। পৃথিবীতে অনেক রাষ্ট্র নায়কদের হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এভাবে পরিবারের সদস্য ও শিশুদের হত্যা করা হয়নি। জাতির পিতা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী, ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারী, নেপথ্য কারিগর ও পরবর্তীতে হত্যাকারীদের রক্ষাকারী ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতকদেরও বিচার করতে হবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সুলতানা শফির সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহুমুদা বেগম কৃক উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১০:৫০ | শুক্রবার, ২৬ আগস্ট ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain