| শনিবার, ১৭ মার্চ ২০১৮ | প্রিন্ট
মানিকগঞ্জ বিএনপি তিনট ভাগে বিভক্ত। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলকে কাবু করার চেষ্টা বদলে বিএনপিতেই এক পক্ষ ব্যস্ত অপর পক্ষকে ঘায়েলে। আর এ কারণে জেলায় শক্তি ক্ষয় হচ্ছে, সে দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কোন্দলে জড়ানো নেতারা।
মানিকগঞ্জ বিএনপির এই দ্বন্দ্ব-সংকট নিজের চোখে দেখে এলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানিকগঞ্জ গিয়েছিলেন ফখরুল। কিন্তু তাকে স্বাগত জানাতে জেলা বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত কেবল পাঁচ জন। কর্মীর সংখ্যাও তেমন বেশি ছিল না। এটা ফখরুলের জন্য বিব্রতকর।
বিএনপির নেতারা জানান, দলের ভেতর দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনে এই স্থবিরতা চলছে ২০১৩ সাল থেকেই। ওই বছরের মাঝামাঝিতে বিএনপির প্রয়াত নেতা হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতাকে সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে মঈনুল ইসলাম খান শান্তকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হয়। এই কমিটি গত পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। আসলে তারা আলোচনাতেই বসেছেন একবার।
বিএনপির নেতারা জানান রিতা ও শান্তর দুইজনই নিজেকে শ্রেয় মনে করেন এবং একে অপরকে পাত্তা দিতে চান না। এ কারণে দুই জনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। তাদের দেখাদেখি জেলার সব পর্যায়েই দুই জনের অনুসারী দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। কোথাও এক পক্ষ গেলে অপর পক্ষ থাকে অনুপস্থিত।
আবার এই দুই নেতার বলয়ের বাইরে আরও একটি বলয় তৈরি হয়েছে যারা এই বিরোধ পছন্দ করছেন না। এমন একজন নেতা ঢা বলেন, ‘মানিকগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি মূলত নষ্ট করেছেন সভাপতি আফরোজা খান রিতা ও সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান শান্ত।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্ণীতি মামলায় জেলে নেয়ার আগে এবং পরে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত যেসব কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল তা একদিনও পালন করেনি রিতা ও শান্ত। এ সময় তারা ব্যক্তিগত কাজ দেখিয়ে দেশের বাইর অবস্থান করেন।
মির্জা ফখরুলের মানিকগঞ্জ সফরে উপস্থিত ছিলেন শান্তর অনুসারীরা। আর তারা ছিলেন বলে ছিলেন না রিতার সমর্থক নেতা-কর্মীরা। আবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বলয়ের বাইরে তৃতীয় বলয়েও নেতা-কর্মীরাও যাননি ফখরুলকে স্বাগত জানাতে।
মির্জা ফখরুলের কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তৃতীয় সেই বলয়ের নেতা এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলে আমাকে না বললেও আমি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতাম। কিন্তু ওটা পারিবারিক অনুষ্ঠান ওখানে আমাকে দাওয়াত না করলে কীভাবে যাই?’।
তবে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও খোন্দকার দেলোয়ারের ছেলে খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু বলেন, ‘জেলা বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে কার্ড পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা উপস্থিত হননি।’
অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে আফরোজা খান রিতা বলেন, ‘খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুবাষির্কীর অনুষ্ঠানে জেলা নেতা কর্মীরা কেন উপস্থিত হয়নি সেটা যারা আয়োজন করেছে তারাই বলতে পারবে। আমার ব্যক্তিগত কাজ থাকায় আমি উপস্থিত হতে পারিনি।’
খোন্দকার দেলোয়ারের ছেলে ডাবলু বলেন, ‘যে অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব উপস্থিত হন সেখানে দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত না হলে বুঝতে হবে তারা দলকে ভালোবাসেন না, মূল্যায়ন করেন না।’
‘নিজে উপস্থিত না থেকে টাকা দিয়ে কর্মসূচি পালন করে জেলা বিএনপিকে নষ্ট করে ফেলেছেন আফরোজা খান রিতা।’
Posted ১৪:০২ | শনিবার, ১৭ মার্চ ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain