শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাদকের চাহিদা না কমলে আমাদের উন্নয়ন বরবাদ হয়ে যাবে

  |   সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

মাদকের চাহিদা না কমলে আমাদের উন্নয়ন বরবাদ হয়ে যাবে

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মাদকের চাহিদা হ্রাস করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আমরা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছি, এই যে আমাদের উন্নয়ন, তার সব বরবাদ হয়ে যাবে যদি মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারি।

 

আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তানেরা অত্যন্ত মেধাবী। সেই প্রজন্মকে যদি মাদকাসক্তি থেকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমাদের স্বপ্ন অবাস্তবই থেকে যাবে। মাদকের চাহিদা কমাতে হলে মিডিয়ার অনেকখানি গুরুত্ব রয়েছে।

 

মন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকের চাহিদা হ্রাসে শুধু ক্রোড়পত্র দিই না, আমরা ছোট ছোট টিভিসি বানাচ্ছি। প্রত্যেকটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। ল্যাবও হয়েছে।

 

সব ক্ষেত্রেই অসাধু লোক আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, হেরোইন উদ্ধারের পর নাকি পরীক্ষা করতে গিয়ে পাউডার হয়ে যায়। সীমান্তেও যেমন চোখ বন্ধ করে অনেকে আসছে, তেমনি পুলিশেও অসাধু কেউ ইয়াবা উদ্ধারের পর পাউডার দিচ্ছে ল্যাবে, এটাও সত্য। এজন্যই আমরা শক্তিশালী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন করেছি। আইন সবার জন্যই সমান।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে জেলখানার ক্যাপাসিটি আছে ৪১ হাজার প্লাস। কিছুদিনের মধ্যে এটা আরও বাড়বে। কিন্তু সবসময় ৮০ হাজার থেকে এক লাখের বেশি কয়েদি থাকে। এরমধ্যে ৬০ শতাংশই মাদক ব্যবসায়ী। বিচারের সময় সাক্ষী পাওয়া যায় না। আর আমাদের লম্বা জট লেগেছে মামলার। সেখানে এই মাদক মামলা হারিয়ে যায়। আমরা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চেয়েছিলাম মাদক মামলার জন্য, যদিও আমরা সেটা এখনো পাইনি। যদি শাস্তিটা দৃশ্যমান হতো তাহলে ডিমান্ড হ্রাস ও সাপ্লাই কমে যেত।

 

তিনি আরও বলেন, মাদকের সাপ্লাই কমাতে বিজিবি, কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা ও জনবল বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বর্ডারে আমরা এখন অনেক কিছু করছি। টেকনাফে দেখেন নাফ নদীর যে বর্ডার তা দুর্গম। সেখানে বিওপি থেকে বিওপি যেতে সময় লাগে। আমরা সেন্সর লাগাচ্ছি সমস্ত বর্ডারে। হেলিকপ্টার টহলের ব্যবস্থা করছি, যাতে মাদকের সাপ্লাই বন্ধ করা সম্ভব হয়।

 

বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার নেই, সাইক্রিয়াটিস্ট নেই। তেজগাঁও সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের কেউ যায় না। বেসরকারি খাতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র চালুর জন্য সরকারিভাবে সহায়তা করার আশ্বাস দেন তিনি।

 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মণি বলেছেন পুলিশও মাদক সেবন ও সাপ্লাই করে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি অস্বীকার করছি না। সাংবাদিক, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব করে। উচ্চবিত্তের মানুষ মাদক সেবন করেন। জেলখানায় গিয়ে দেখুন, মাদকের মামলায় পুলিশের সদস্য যেমন আছে, র‍্যাবের সদস্যও আছে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও রয়েছে। পুলিশ বলে তার জন্য আইন আলাদা হবে বিষয়টি এমন নয়।

 

ডোপ টেস্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশে যারা মাদক নেয় তাদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এই জায়গাটাতে আমরা খুব কঠিন অবস্থানে চলে আসছি।

 

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, সব চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট যেন বাধ্যতামূলক করা হয়। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। চাকরির শুরুতে যারা সিলেক্টেড হবে তাদের ডোপ টেস্ট করার প্রচলন পুরোপুরি নিতে যাচ্ছি। পুলিশ-বিজিবি সব জায়গায় ডোপ টেস্টের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হচ্ছে কি না সেখানেও মনে হলে আমরা ডোপ টেস্ট করব।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:১৫ | সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com