শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মশায় কুপোকাত ঢাকার দুই মেয়র!

  |   সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট

মশায় কুপোকাত ঢাকার দুই মেয়র!

মশার দাপটে রীতিমতো কুপোকাত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়র। কিছুতেই মশাকে বাগে আনতে পারছেন না তারা।

গত কয়েকদিন যাবৎ দুই মেয়রসহ সিটি কর্পোরেশনের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মশার কারণে সব ধরনের ছুটি বাতিল হয়েছে তাদের। ওয়ার্ড কমিশনারদের সহযোগিতায় প্রতিদিন বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো, জনসচেতনতায় আলোচনা সভা ও মাইকিংসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।

ব্যাপক কর্মসূচি সত্ত্বেও এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

সরকারি হিসাব মতে, চলতি বছরের ২১ জুলাই (রোববার) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৬ হাজার ৫৪৪ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৫ জন। এ ছাড়া চলতি মাসের মাত্র ২১ দিনেই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৪৩৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।

তবে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারাই বলছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সঠিক সংখ্যা স্বাস্থ্য অধিদফতরে নেই।

সরকারি হিসাবে শুধু হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাদের হিসাব রয়েছে। তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের তাগাদা সত্ত্বেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা রাজধানীর সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাঠানো হচ্ছে না।

meyor-atiq

বেসরকারি হিসাবে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা মাত্র ৫ জন নয়, কমপক্ষে এর চারগুণ বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ২৮৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ১২ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে শুধু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৫৫৮ জন রোগী।

তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেলে ৩৪ জন, মিটফোর্ডে ৬৪, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৫, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩৬, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ৪০, বিজিবি হাসপাতালে ৫ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপোতালে ৪ জন ভর্তি রয়েছেন।

বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেলে ১৪ জন, ইবনে সিনায় ১৩, স্কয়ারে ১০, সেন্ট্রালে ১১, কাকরাইলে ১৩, খিদমা হাসপাতালে ৪, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৪, সালাউদ্দিনে ১০ ও পপুলার হাসপাতালে ১৫ জন ভর্তি আছেন।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা থেকে বস্তির বিভিন্ন বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে। সামান্য জ্বর কিংবা মাথা ব্যথা হলে অন্যান্য বছর নিছক জ্বর ভেবে হাসপাতালতো দূরের কথা চিকিৎসকের কাছে যেতেন না। কিন্তু এবার ডেঙ্গুর ধরণ পাল্টে যাওয়ায় সাধারণ জ্বর হলেও চিকিৎসক বা হাসপাতালে ছুটছেন তারা।

শনিবার (২০ জুলাই) ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের বাসভবনে এক সাক্ষাৎ শেষে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) এ দেশীয় প্রতিনিধি ডা. এডউইন স্যালভাদর। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন যে মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে তা মানসম্পন্ন কি-না, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।

meyor-khokon

দুই মেয়রের দৌড়ঝাঁপ

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে প্রচারাভিযানে নেমেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল জনসচেতনতামূলক একটি শোভাযাত্রা করেন তিনি। রাজধানীর উত্তরা ক্লাব থেকে শুরু হয়ে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রাটি।

কলেজ প্রাঙ্গণে একত্র হওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে এডিস মশা নিধনের উপায় ও রোগের প্রতিকার বিষয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করেন তিনি। তা ছাড়া ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য ডিএনসিসি কর্তৃক নির্মিত অডিও ভিজ্যুয়ালের ডিভিডি হস্তান্তর করেন। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া যাতে বাড়ি, ফ্ল্যাট, ছাদ, গ্যারেজ, বাগান এবং অন্যান্য স্থানে বংশবিস্তার করতে না পারে সে জন্য শিক্ষার্থীদের স্ব-উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, শিক্ষার্থীরাসহ সমাজের সব স্তরের মানুষ এগিয়ে এলে আমরা ঢাকা শহরকে ডেঙ্গুমুক্ত করতে পারব।

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীদের দেখতে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শনে যাচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু সম্পর্কে তিনি বলেন, অন্য বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মশা নিধনে আমরা যেসব ওষুধ ব্যবহার করছি, তা প্রতিশ্রুতির চেয়ে কম কার্যকর…। এবারে তুলনামূলকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবটা বেশি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের দেখতে গিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা কিন্তু ময়লা আবর্জনায় বংশ বিস্তার করে না। এটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করে। তাই আমরা শিগগিরই বাসাবাড়িতে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিগুলোতেও মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য মশক কর্মী পাঠাবো। আপনারা তাদেরকে বাসাবাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে সহযোগিতা করবেন। সেই সঙ্গে আপনার প্রতিবেশীদেরকেও বলবেন যেনো কোনো পানি দুই দিনের বেশি জমিয়ে না রাখে। সবার সচেতনতায় আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে পারব। জাগোনিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:২৫ | সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com