নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
বিএনপিকে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যের উত্তর দেওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন, সরকারের এই মন্ত্রী এই বলছেন, সরকার এই বলছে- আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আমি বলি, কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কারণ উত্তর দেওয়ার সময় নেই। উত্তর দিতে গেলেও অনেক নিম্নপর্যায়ে যেতে হবে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে এক শতাংশ লোক দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের কোনো ভূমিকা নেই। ভূমিকা আছে লুটেরাদের। কিছু উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধীজীবী তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে, এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এছাড়া আর কোনো পথ নেই।
তিনি বলেন, আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বিএনপি সরকার হবে শ্রমিক নির্ভর-সব পেশার মানুষের। ২০৩০ সালের মধ্যে কল্যাণকর রাষ্ট্র করার জন্য যা যা করা দরকার সব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে ফেলেছে। কিন্তু জনগণের স্রোত রোধ করতে পারেনি। আমরা সামনে এগিয়ে যাবো। ঢাকার সমাবেশ ১০ তারিখ হবে। এখানে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনকে বলবো, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।
তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসা সেবায় সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে। আফগানিস্তানের চেয়ে বেশি টাকা চিকিৎসায় খরচ করে। তাহলে এইসব মানষ বাঁচবে কীভাবে। আমরা যদি একটা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ২৫ শতাংশ টাকা সাশ্রয় হবে। আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার হলে সবার জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ছাড়াও যারা বেকার থাকবে তাদের জন্য বেকার ভাতাও দেওয়া হবে।
আমীর খসরু বলেন, শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নেই। বাসস্থান নেই। শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে। লুটপাট করছে কিন্তু সবাই না। মাত্র এক শতাংশ লোক লুটপাট করছে। যারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। এই সম্পদ তারা বিদেশে পাচার করেছে। এই সম্পদ যদি দেশে থাকতো তাহলে দেশের মানুষ কিছুটা হলেও সুযোগ পেতো। ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও শ্রমিক নেতা অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শীমুল বিশ্বাস বলেন, সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর হচ্ছেন শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। এই শ্রমজীবী মানুষদের অমর্যাদা-অবমূল্যায়ন করে কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।
প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন। রেলওয়ে শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর মঞ্জুরের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, সহ-সভাপতি শামসুল আলম (ডক), সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুল বাতেন, দক্ষিণ জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মহসিন খান তরুণ, রাঙ্গামাটি জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ফেনী জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি হুমায়ুন কবির চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা শ্রমিকদলের সভাপতি শাহেনেওয়াজ চৌধুরী মিনু, শ্রমিকদল নেতা মো. হারুন, গাজী আইয়ুব আলী, মোতালেব চৌধুরী, মো. আলী, ইব্রাহিম ফরাজী, সফিকুর রহমান মজুমদার, আবু বক্কর সিদ্দিক, হাসান মাহমুদ প্রমুখ।
Posted ১৬:২৮ | বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain