| বুধবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে জণগণের সঙ্গে সরকার প্রতারণা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বিএনপি কর্তৃক গঠিত ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংক্রান্ত’ কমিটি।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কমিটির আহবায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা জানান।
শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই কমিটি গঠন করা হয়। তাদের ভ্যাকসিন সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত জনগণের সামনে উপস্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ডা. হারুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুস সালাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. মোশাররফ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রার্দুভাবের শুরু থেকেই বাংলাদেশের সরকার চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বরং করোনা আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করতে, চিকিৎসা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মাস্ক কেলেঙ্কারি, পিপিই কেলেঙ্কারি, হাসপাতাল কেলেঙ্কারি, শনাক্তকরণ পরীক্ষা নিয়ে কেলেঙ্কারি, করোনা শনাক্তকরণ জালিয়াতিসহ অসংখ্য জালিয়াতি ও দুর্নীতি উপহার দিয়েছে সরকার।
তিনি বলেন, বর্তমান বিনাভোটের সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে স্বাস্থ্যখাত। তার ওপর দেশে করোনা মহামারির সময়ে তাদের দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে গেছে। এখন করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে জণগণের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেছে। সরকার করোনা ভ্যাকসিন পেতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করায় জনগণের দোরগোড়ায় ভ্যাকসিন পৌঁছানো এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ড. মোশাররফ বলেন, করোনা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও এখন পর্যন্ত করোনার ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশ সরকার ন্যূনতম ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিশ্বের অনেক দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়ে গেছে বা পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েক প্রকার ভ্যাকসিন যেমন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন, বায়োটেক/ ফাইজারের ভ্যাকসিন, মর্ডানার ভ্যাকসিন, স্পোটনিক-৫ ভ্যাকসিন, সিনোফার্মা বিবিআইবিপি ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশে ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে দোলাচল তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন ক্রয় করতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজের দাম প্রায় দ্বিগুণ পড়বে। যদি কয়েক কোটি ভ্যাকসিন আমদানিও হয় তা সাধারণ মানুষ আদৌ পাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। করোনা ভ্যাকসিন বিতরণের জন্যও সরকারের প্রস্তাবিত জেলা, উপজেলা কমিটির মাধ্যমে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হলে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের কাছে এই ভ্যাকসিন যথাযথভাবে পৌঁছাবে না।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া জনগণের অধিকার। এই অধিকার থেকে জনগণ যাতে বঞ্ছিত না হয় সেজন্য বিএনপি প্রথম থেকেই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। এই ভ্যাকসিন যাতে জনগণ সঠিকভাবে পায় সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, ভ্যাকসিন বিতরণের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রণিত গাইডলাইন সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। কোনো অবস্থাতেই যাদের ভ্যাকসিন পাওয়ার অগ্রাধিকার রয়েছে তাদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্ছিত করা যাবে না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার মাধ্যমে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবর্তে অন্যদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে। দেশের ৬০ বছরের অধিক বয়সী জনগোষ্ঠী, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠী / প্রাধিকার প্রাপ্ত জনগোষ্ঠী / সম্মুখসারির করোনা যোদ্ধারা বঞ্ছিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ড. মোশাররফ বলেন, বেসরকারি খাতে উচ্চমূল্যে চিহ্নিত কতিপয় মহলের নিকট প্রায় ৩ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন বিক্রি সরাসরি জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থি। কোভিড-১৯’র ভ্যাকসিন সংগ্রহে শুধুমাত্র একটি দেশ/স্বার্থন্বেষী মহলকে খুশি রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Posted ১৩:৩৬ | বুধবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain