শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈশ্বিক ক্ষুধা বৃদ্ধি পেয়েছে

  |   বৃহস্পতিবার, ০৩ মে ২০১৮ | প্রিন্ট

বৈশ্বিক ক্ষুধা বৃদ্ধি পেয়েছে

বিশ্বে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার জোরদার হলেও সংঘাত,দুর্ভিক্ষ এবং উদ্বাস্তু সঙ্কট অব্যাহত থাকার ফলে বৈশ্বিক ক্ষুধা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উঠে এসেছে ঢাকায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায়।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বৈশ্বিক দৃশ্যপটের পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে। কারণ বৈশ্বিকতাবাদ-বিরোধী মনোভাবের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পাশাপাশি মানুষ ও জ্ঞানের প্রবাহের ক্ষেত্রে হুমকি সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া, ব্রেক্সিট এবং বহু দেশে অভিবাসনবিরোধী কথাবার্তা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিশ্ব গত কয়েক দশক ধরে বিদ্যমান বৈশ্বিক সংহতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে; যা দারিদ্র্য ও অপুষ্টির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন অবনতি ঘটিয়েছে।

বৃহস্পতিবার গুলশান-২-এর লেকশোর হোটেলে ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট
(আইএফপিআরআই) আয়োজিত ‘গ্লোবাল ফুড পলিসি রিপোর্ট ২০১৮’ অনুষ্ঠানে আলোচকরা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইএফপিআরআইয়ের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. আক্তার আহমেদ, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইএফপিআরআই’র ডিরেক্টর জেনারেল ড.সেনগেইন ফেন।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রোফেসর ড. এম এ সাত্তার মন্ডল, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ওয়ায়িশ কবির, সিপিবির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ফাহমিদা খাতুন, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ প্রমুখ।

চলতি বছরের গ্লোবাল ফুড পলিসি রিপোর্টে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ২০১৭ সালের নীতির অগ্রগতিগুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈশ্বিকতাবাদবিরোধীতার ফলে সৃষ্ট উদ্বেগ ও আমাদের বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক সংহতিকে কিভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে সে বিষয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলো আজকের অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়।

পর্যালোচনায় ২০১৭ সাল 
২০১৬ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হয়ে পড়ার পর সহনীয় বৈশ্বিক আর্থিক পরিবেশ, উন্নত ও কয়েকটি উদীয়মান অর্থনীতির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক গতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মতো সহায়ক পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পট পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছিল। কিন্তু এসব দেশে উদ্ভুত বৈষম্যের ফলে এই বৈশ্বিক পুনরুদ্ধার বিঘ্নিত হয়েছে; যা দারিদ্র্য বিমোচনের সম্ভাবনা ক্ষুণ্ন করতে পারে। সেই সঙ্গে এক দশক ধরে দীর্ঘমেয়াদে হ্রাস পাওয়ার পর বৈশ্বিক ক্ষুধা পরিস্থিতি বাড়ারে পারে। শক্তিশালী কৃষি উৎপাদন ও উদীয়মান অর্থনীতিতে চাহিদার প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ার ফলে ২০১৭ সালের শেষ মাসগুলোতে বৈশ্বিক খাদ্যমূল্য ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে।

টেকসই উন্নয়নের জন্য গতিসঞ্চার
টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে গতিশীলতার ক্ষেত্রে ২০১৭ সালে বেশ কয়েকটি প্রধান বৈশ্বিক নীতিগত অগ্রগতি প্রতিফলিত হয়েছে। এসব আন্তর্জাতিক প্রয়াসে ক্ষুধা,জলবায়ু পরিবর্তন,বৈষম্য, চাকরি এবং প্রবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য ব্যবস্থা ব্যবহারের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। জি ২০ কৃষি মন্ত্রীরা খাদ্য ও কৃষি উৎপাদনের পানির টেকসই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। জি ৭ কৃষি মন্ত্রীরা বাজেট সঙ্কট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন থেকে কৃষকদের আয় রক্ষা করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। উচ্চাভিলাষী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সংক্রান্ত সভায় অগ্রগতির ওপর নজরদারির জন্য একটি সূচক কাঠামো আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার পাশাপাশি ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন বিষয়গুলো অব্যাহত রয়েছে।

বৈশ্বিকতাবাদ বিরোধীতা বাড়ছে 
খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির দৃঢ় অঙ্গীকার থাকার পরও ২০১৭ সালে বৈশ্বিক ঐক্যমত, সহযোগিতা এবং সংহতি থেকে বিচ্যুতি লক্ষ্য করা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র বছরের প্রথম দিকে ট্রান্স-প্যাসেফিক পার্টনারশিপ ট্রেড এগ্রিমেন্ট থেকে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ইউরোপে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য আলোচনা শুরু করে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সদস্যরা বুয়েনস এয়ার্স নগরীতে অনুষ্ঠিত ১১তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

খাদ্য ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন
বৈশ্বিক দারিদ্র্য,ক্ষুধা এবং অপুষ্টি সাম্প্রতিকালে নজিরবিহীনভাবে কমে যাওয়ার মূলে রয়েছে খাদ্য ব্যবস্থা এবং তা ভবিষ্যতেও অগ্রগতির ভিত্তি হিসেবে থাকবে। তবে বৈশ্বিক পরিবর্তন যেমন, বৈশ্বিকতাবাদবিরোধীতা এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের খাদ্য ব্যবস্থা স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত সঙ্কটের ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে। অনেক স্থানেই জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থায় অধিক লবণ, চিনি, ও চর্বিযুক্ত খাবারের প্রবণতা বাড়ছে এবং খাদ্য ব্যবস্থায় পরিবেশগত চাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ তীব্র হয়ে ওঠার পাশাপাশি এটা পরিষ্কার যে খাদ্য ব্যবস্থা হচ্ছে উন্নত মানবজীবন ও পরিবেশগত স্বাস্থ্য বজায় রাখার মৌলিক চলিকাশক্তি। বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের এই সময়ে খাদ্য ব্যবস্থা কিভাবে বদলাতে হবে তা বোঝানোর জন্য, আমাদের বুঝতে হবে বৈশ্বিক পরিবর্তন কিভাবে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে।জাগোনিউজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৫:৩৬ | বৃহস্পতিবার, ০৩ মে ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com