বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বমিডিয়া ধূয়ে দিল বাংলাদেশের নির্বাচন

  |   রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

বিশ্বমিডিয়া ধূয়ে দিল বাংলাদেশের নির্বাচন

all_meadia_intro-

৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বেশ সরব ছিল। কোন কোন সংবাদ মাধ্যম বাংলাদেশের নির্বাচনকেই তাদের প্রধান শিরোনাম করেছে। বিবিসি, আল জাজিরা বাংলাদেশের নির্বাচনকে তাদের মূল শিরোনাম করেছে। প্রতিবেদনগুলোতে ভোটকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটারের কম উপস্থিতির বিষয়গুলোসহ ধূয়ে দিয়েছে আমাদের নির্বাচনকে।

আল জাজিরা : ‘সহিংসতায় আচ্ছন্ন বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন’ শিরোনামে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা। তাতে বলা হয়, বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।

বিতর্কিত এই সাধারণ নির্বাচনে বহু ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও বিরোধীদলের কর্মীদের মধ্যে সহিংসতায় সারাদিনে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছে।

সেইসাথে হাজার হাজার বিরোধী সমর্থকরা অনেক ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স কেড়ে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, কমপক্ষে ২০০ কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে বিরোধী সমর্থকরা।

আল জাজিরার মতে, নির্বাচন হয়ে গেলেও বাংলাদেশে আরো বহু মারাত্মক সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে।

বিবিসি : ‘সংঘর্ষ আর বর্জনে বাংলাদেশের নির্বাচন পণ্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই সাধারণ নির্বাচন চলাকালে পুলিশ ও বিরোধী দলের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সহিংস সংঘর্ষ চলে। ইতোমধ্যে বিরোধী দল এ নির্বাচনকে বর্জন করেছে।

রোববারের এ নির্বাচনে সারাদিনের সহিংসতায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনকে ঘিরে গতকয়েক দিনে অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া শত শত ভোটকেন্দ্র আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিরোধী দল এ নির্বাচন বর্জন করে দুদিনের হরতাল আহবান করেছিল। তারা এ নির্বাচনকে ‘কলঙ্কজনক প্রহসন’ বলে অভিহিত করে।

রয়টার্স : ‘সহিংসতা আর বর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের বিজয়’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্স বলেছে, সংসদীয় নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে দেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিজয়ী হতে চলেছে।

সংবাদ সংস্থাটির মতে, নিসন্দেহে বিরোধীদলের বর্জনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে এ বিজয় কখনো কোন ফলাফল উৎপাদন করবে না।

ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি আসনে আওয়ামী লীগ কোনরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই বিজয়ী হয়। ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকগণ এ নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করেছেন। যাইহোক আশা করা যাচ্ছে, চলতি মাসেই কিছু সময়ের জন্য শেখ হাসিনা একটি নতুন সরকার গঠন করবে।

আনন্দবাজার পত্রিকা : আনন্দবাজার ‘অশান্তির আবহেই মিটল বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন’ শিরোনাম করেছে।

তাতে তারা পত্রিকাটি বলেছে, রবিবারের বাংলাদেশের নির্বাচনে রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে জয়ী হলেন আওয়ামি লিগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ওই কেন্দ্র থেকে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫৯৯টি ভোট পেয়ে জয়ী হলেন তিনি।

লাগাতার রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে রবিবার বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন হয়। ১৪৭টি আসনের জন্য ১৮ হাজার ২০৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোট চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বাংলাদেশের মোট ভোটারের সংখ্যা ৯ কোটি ১৯ লক্ষ।

সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ৪ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না। ১৪৭টি আসনের জন্য নির্বাচনে লডে়ছেন ৩৯০ জন প্রার্থী।

দেশের মোট ৫৯টি জেলায় ভোট হয়েছে। তবে চাঁদপুর, রাজবাড়ি, জয়পুরহাট, শরিয়তপুর ও মাদারিপুর—এই পাঁচটি জেলায় ভোট হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনের জন্য মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী, ৮০ হাজার পুলিশ, ৮ হাজার র্যাব ও ১৬ হাজার বিজিবি জওয়ান। নিষিদ্ধ করা হয় যান চলাচলও।

জি নিউজ : জি নিউজ শিরোনাম করেছে, ‘হিংসার নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল আওয়ামি লিগ, ৮৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় হাসিনার, ভোট বাতিলের দাবিতে হরতালের ডাক বিরোধীদের’।

তাতে পত্রিকাটি বলেছে, হিংসার আবহে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। আজ বিকাল ৪টায় শেষ হয় ভোট। হিংসার ভোটে ১৭ জন মারা গিয়েছেন। ভোটদানের হার খুব কম। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভোট বয়কটের ডাক দেয়।

‘একতরফা’ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সারাদেশে সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল।

বিবিসি বাংলা : ‘ভোটার নেই, পর্যবেক্ষকেরও দেখা নেই’ শিরোনাম করেছে বিবিসি বাংলা।

তারা বলেছে, বাংলাদেশের বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিদেশী পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করছেন না। ঢাকায় নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোতে দেশীয় পর্যবেক্ষকের সংখ্যাও ছিল খুবই কম।
অনেকগুলো কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকের কোন উপস্থিতিও দেখা যায়নি। আবার কিছু কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকরা ছিলেন খোশ গল্পে। তবে কমবেশি তারা সবাই জানিয়েছেন ভোটকেন্দ্রগুলোতে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও আতংকের কারণে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২৩:৫৭ | রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com