| বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর : পুতুলের মাথার পরচুলা (ক্যাপ) তৈরি করছেন শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের এক উদ্যোক্তা । এসব পরচুলা রফতানি হচ্ছে বিদেশে। এতে স্বাবলম্বী হয়েছেন এলাকার অনেক নারী-পুরুষ। বাদ যায়নি স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্রীরাও। করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকার এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আয় করছে বাড়তি টাকা।
সরজমিনে দেখা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের ভাটিয়াপাড়া গ্রামে গড়ে উঠেছে লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ’ নামের একটি কারখানা। ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল ৩০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন নিপুণ হাতে। এ ছাড়া অনেকেই বাড়িতে বসেও তৈরি করছেন পরচুলা। শেষে এগুলো কারখানায় পাঠিয়ে দেন তারা।
লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানার প্রশিক্ষক সাখি আক্তার বলেন, বসে না থেকে চেষ্টা করলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। আমাদের কারখানায় এখন ৩০০ জনের মতো নারী কর্মী ক্যাপ তৈরি করছেন। তারা প্রতিজন মাসে ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। এতে তাদের সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে তিন রকমের পরচুলা (ক্যাপ) তৈরি হয়। একটি মাথার ক্যাপ, অন্যটি পুতুল ক্যাপ এবং নৌকা ক্যাপ। কেউ ইচ্ছে করলে আমাদের এখান থেকে এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে পরচুলা তৈরি করে স্বাবলম্বী হতে পারে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রামের নারীরা সচরাচর স্বামী-সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু পরচুলার কারখানা আমাদের এলাকায় গড়ে ওঠার পর কোনো নারীই আর বেকার নাই। তারা পরচুলা তৈরি করে হাজার হাজার
টাকা আয় করছেন। কেউ কেউ প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে বসেই বানাচ্ছেন পরচুলা।
লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানা কর্মী তুষ্টি আক্তার বলেন, স্কুল বন্ধ, তাই এই সুযোগে পরচুলা তৈরি কারখানায় কাজ করছি। পুতুলের জন্য তৈরি পরচুলা বানাতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ দিন এবং বড় মানুষের জন্য পরচুলা তৈরি করতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ দিন। আমি এখান থেকে প্রতি মাসে সাত-আট হাজার টাকা আয় করছি।
কারাখানা মালিক লিখন বলেন, আমার এক পরিচিত বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় লাবীবা তাহসিন হেয়ার ক্যাপ কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করি। এ পণ্যের কদর থাকায় বিষয়টি নিয়ে ভাবি। আস্তে আস্তে শুরু করে লাভের মুখ দেখছি। আমি ঢাকা থেকে চায়নিজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করি। তারপর এগুলো শেরপুর এনে ক্যাপ বানাই। আমরা এখান থেকে পরচুলাগুলো ঢাকা পাঠাই। এরপর চায়নারা সেটি কিনে তাদের দেশে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, যদি কোনো সরকারি বা বেসরকারি এনজিও থেকে অল্প সুদে ঋণ পাই, তাহলে কারখানাটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে আমার।
জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, যেকোনো উদ্যোক্তাকে আমরা অল্প সুদে ঋণ দিয়ে থাকি। যদি তারা কেউ আমাদের কাছে আবেদন করে, তাহলে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মতো ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হরা হবে।
Posted ২৩:০৭ | বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin