শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাংলার সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ

  |   রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

বাংলার সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ

বাংলার সূর্য সন্তান ভোলার গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ তাকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। বাংলার ৭ শ্রেষ্ঠ বীর বাঙ্গালীর তিনিও একজন।

এ মহান পুরুষ ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন দ্বীপজেলা ভোলার দৌলতখান উপজেলার হাজীপুর গ্রামে। পিতা হাবিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন হাবিলদার মা মোসাম্মৎ মালেকা বেগম। বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ছেলেবেলা কাটে বাবা মার সঙ্গে কুমিল্লা সেনানিবাসে।

সেখানে তিনি সৈনিকদের সুশৃঙ্খল জীবনের সঙ্গে পরিচিত হন। ব্যান্ডের তালে তালে পা ফেলে প্রতিদিন কুচকাওয়াজ করতে করতে সৈন্যরা এগিয়ে যেতো। কিশোর মোস্তফা কামাল তা দেখে অনুসরণ করতেন, আর ভাবতেন আমিও একজন সৈনিক হব। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন খুব সাহসী ও চৌকস। বেশী লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি। তবে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এরপর মোস্তফা কামালের ডাক আসে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য।

তিনি কাল বিলম্ব না করেই ১৯৬৭ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৬৮ সালের ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে অতর্কিত হামলা চালায়। তারই প্রতিবাদে গ্রামে গঞ্জে, শহরে-বন্দরে প্রতিটি ঘরে বাংলার সাহসী জনগণের প্রতিরোধের দুর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে তোলে। সামরিক, আধাসামরিক, জনসাধারণ, পুলিশ, আনসার, ছাত্রছাত্রী, কৃষক-শ্রমিক, সর্বস্তরের মানুষের ভিতরে সংগ্রামের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অস্থায়ী সদর দপ্তর আখাউড়ায় কর্মরত ছিলেন সিপাহী মোস্তফা কামাল।

২৭ শে মার্চ তারিখে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বাংলার সূর্য-সন্তানরা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, সাহসী বীর মোস্তফা কামাল তাদেরই একজন। ১৮ই এপ্রিল ১৯৭১ সাল চার দিকে প্রচন্ড শব্দ ও অস্ত্রের গর্জন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী গঙ্গা সাগড়ের উত্তরের দরইন গ্রামে আক্রমন করে। এ আক্রমণে একজন মুক্তিযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়। পাশেই অবস্থানরত মোস্তফা কামাল এগিয়ে গেলেন। নিমিষে তুলে নিলেন তিনি তার অস্ত্র। অবিরাম গুলি চালালেন। উপায়ন্তর না দেখে মোস্তফা কামালের অধিনায়ক সহ তার কোম্পানী পিছু হটলেন।

সেদিন মোস্তফা কামালের অসীম সাহসের জন্যই তার পুরো কোম্পানী পশ্চাদপসরণ করে সবার জীবন রক্ষা করল। কিন্তু শত্রু সৈন্যরা তাকে ছাড়ল না। অন্যদিক দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে তারা মোস্তফা কামালকে ঘিরে ফেলল। মৃত্যু অবধারিত জেনেও তিনি ভয় পেলেন না। আত্মসমর্পণও করলেন না। বাঘের মত শত্রু উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। যতক্ষণ জ্ঞান ছিল প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন। অবশেষে যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। শহীদ হলেন সিপাহী বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল।

তার জন্মদিনে এ বীর সন্তানকে স্মরণ করে আজ বেলা ১১টায় ভোলার আলী নগর ইউনিয়নে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালমহা বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হযেছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:১৬ | রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com