শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ফ্রিল্যান্সিংয়ে তৃষ্ণার সফলতা : গ্রামে বসেই মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

  |   শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট

ফ্রিল্যান্সিংয়ে তৃষ্ণার সফলতা : গ্রামে বসেই মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

শাহরিয়ার মিল্টন,শেরপুর : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের মেয়ে তৃষ্ণা দিও। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরির আশায় বসে না থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই প্রতিমাসে আয় করছেন ৬০ হাজার টাকা। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের বেনুপাড়া গ্রামের রবার্ট রেমা ও জলি দিওর মেয়ে। তৃষ্ণা দিও বলেন, ২০১৯ সালে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসা প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) সম্পন্ন করে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে মানবসম্পদ বিভাগে চাকরি নেন। তবে কাজের ধরণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি।

তাছাড়া রাজধানীতে নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে বসে চাকরি তার ভালো লাগেনি। তাই কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। নতুন চাকরির জন্য গ্রামে থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আবেদন পাঠাতে থাকেন। তবে কোনো সাড়া পাননি। এ সময় তার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং করেও আয় করা যায়। দেরি না করে ভর্তি হন ময়মনসিংহের নকরেক আইটি ইনস্টিটিউটে গ্রাফিকস ডিজাইন কোর্সে। প্রতি সপ্তাহে দুদিন ক্লাস হতো। তিনি কাকরকান্দি বাজার থেকে হালুয়াঘাট হয়ে ময়মনসিংহে যেতেন ক্লাস করতে। আবার ক্লাস শেষে বাবার সাথে ফিরতেন বেনুপাড়া গ্রামে। এভাবে তিনি কোর্সটি সম্পন্ন করেন।

তৃষ্ণা দিও বলেন, প্রশিক্ষণ নেয়ার প্রায় ছয় মাস পর ৮৬ ডলারের একটি কাজ পেয়ে যাই। কাজটি অত্যন্ত যতœ ও মনযোগ সহকারে শেষ করি। কাজের মান ভালো হওয়ায় ওই গ্রাহকের মাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি কাজ পাই। এখন আমি বিভিন্ন ধরনের পোস্টারের নকশা, বিজনেস কার্ড, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, পরিচয়পত্র, রেস্তোরাঁর খাবারের তালিকা, প্রচারপত্র ইত্যাদির নকশা করছি। শুরুতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ পেতে বা করতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। দেশের এক গ্রাহক আমাকে দিয়ে একটি কাজের নকশা ১৭ বার পরিবর্তন করিয়েছিলেন। পরে কাজটি তার পছন্দ হয়৷ তবে এতে আমার অভিজ্ঞতা বেড়েছে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে ভালো মানের ও বড় বড় কাজের অর্ডার পেতে থাকি। ফলে আয়ের পরিমাণও বাড়ে। মুলত এ পেশায় ভালভাবে কাজ শিখে নিজেকে বিশ্ববাজারে যোগ্য করে তুলতে হবে। তাহলেই অনলাইনে কাজের অভাব হবে না। অর্থ নয়, আগে নিজেকে যোগ্য করতে সময় দিতে হবে।

তৃষ্ণার দিও বলেন, অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। স্পনসরও তৈরি ছিল। কিন্তু আমার বাবা বললেন, গ্রামে বসেই যদি ভালো আয় করতে পারো, তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কী হবে ? আমিও ভেবে দেখলাম, কেন যাবো আমার গ্রাম ছেড়ে বিদেশে। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে গ্রামেই থেকে গেলাম। বর্তমানে আমি প্রতি মাসে কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা আয় করি। ভবিষ্যতে গ্রামের ছেলেমেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে চাই। তৃষ্ণার বাবা রবার্ট রেমা বলেন, সন্তানের সফলতায় সব বাবার মতো আমিও গর্বিত। তরুণ তরুণীদের প্রতি আমার আহ্বান, চাকরি না পেলে হতাশ হওয়া যাবে না। নিজেকে যোগ্য করে তুললে চাকরিই খুঁজে বের করবে প্রার্থীকে। স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী নেত্রী কেয়া নকরেক ফ্লোরিডা বলেন, মেয়েরা এখন কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। উচ্চতর পড়ালেখা করে তৃষ্ণা দিও আজ নিজ গ্রামের ঘরে বসেই বড় অংকের টাকা উপার্জন করছে। তার এ সফলতায় আমরা আনন্দিত।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৯:৩৫ | শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com