শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

প্রভাব পড়তে পারে বাড়ি ভাড়ায়

  |   শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট

প্রভাব পড়তে পারে বাড়ি ভাড়ায়

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নের পাশাপাশি গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে ভাড়া বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাড়ির মালিকরা। এরই মধ্যে সিটি কর্পোরেশন কয়েকটি জোনে হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নে কাজ শুরু করায় বাড়ি মালিকরা এক ধাপে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়া বাড়িয়েছেন। এবার গ্যাসের দাম বাড়ার ফলে আরও এক ধাপে বাড়ি ভাড়া ভাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে ভাড়াটিয়াদের প্রত্যহ জীবনে ব্যয় বাড়বে।

বাড়ি মালিকদের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নের ফলে তাদের ট্যাক্স বেড়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় বাড়ির ট্যাক্স দুই থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এ অজুহাতেই বাসাপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাড়িয়েছেন তারা। এখন গ্যাসের বিল বাড়ার ফলে বাড়ি ভাড়ার সঙ্গে বাড়তি এ ব্যয় গুণতে হবে ভাড়াটিয়াকে।

এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে ঢাকার বাড়ি মালিকদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ভাড়াটিয়াদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলেও কোনো পদক্ষেপ নেই। উপরন্তু এ বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতেও চায় না সিটি কর্পোরেশন। সংস্থাটির মতে, ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব তাদের না। এটা মূলত গৃহায়ণ ও গণপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের কাজ। তাছাড়া এ নিয়ে সরকারের আলাদা একটা আইন তৈরি করার কথা রয়েছে। এখনও কোনো আইন বা নীতিমালা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আসলে লোকেশন অনুপাতে ভাড়া নির্ভর করে। আর বাড়িওয়ালাও বিভিন্ন অজুহাত খোঁজেন। এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ভাড়া নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকারের একটা আইন করার কথা রয়েছে। ওটা এখনও তৈরি হয়নি। আইনটি দ্রুত তৈরি হওয়া উচিৎ। অন্তত একটা নীতিমালা হলেও অনেক ভালো হয়।’

তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন যেহেতু ঢাকাবাসীর সেবা দিচ্ছে সেহেতু বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিৎ। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবো। বিষয়টি আমরা দেখছি।’

এদিকে গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে ঢাকার হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নের উদ্যোগ নেয় দুই সিটি কর্পোরেশন। গত ২ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমাবস্থায় দুই সিটির অঞ্চল ১ ও ২ এলাকায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ফলে এরইমধ্যে এসব এলাকায় চলতি মাস থেকে অতিরিক্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় সবক্ষেত্রেই পানি, বিদ্যৎ ও গ্যাসের বিল পরিশোধ করেন বাড়ি মালিকরা। এদের বড় একটি অংশ ভাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত এ তিনটি বিলের দাম নিয়ে নেন। সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স সমতায়নের ফলে ভাড়াটিয়াদের চলতি মাসের ভাড়ার সঙ্গে বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী মাস থেকে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। ফলে বাড়ি ভাড়ার সঙ্গে গ্যাসের অতিরিক্ত বিল যোগ হচ্ছে ভাড়াটিয়ার ঘাড়ে। একইসঙ্গে এ দুটি বিষয়ের সঙ্গে পানির দাম বৃদ্ধিরও আশঙ্কা করছেন নগরবাসী।

রাজধানীর ভাড়াটিয়ারা বলছেন, এমনিতেই ব্যয়বহুল শহর ঢাকা। খুবই সাধারণ জীবনযাপনেও হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এর সবচেয়ে বেশি সম্মুখীন হচ্ছেন মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদেরকে আয়ের প্রায় সিংহভাগই দিয়ে দিতে হয় ভাড়াবাবদ। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও অনেকটা নাগালের বাইরে। এর সঙ্গে বাড়তি ভাড়া পরিশোধে আর্থিক চাপে পড়বেন তারা।

এ বিষয়ে ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার বলেন, বাড়ি  ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে বাড়িওয়ালারা কারণে-অকারণে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনকে উদ্যোগ নিতে হবে। আইনকে যুগোপযোগী করতে হবে। ট্যাক্স বৃদ্ধি কিংবা গ্যাস বিদ্যুৎ ও পানির বিল বৃদ্ধির কারণে ভাড়া বাড়ানো যাবে না।’

এদিকে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মালিকদের অধিকাংশই ব্যাংকঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছে। যে কারণে মাসে মাসে ব্যাংকঋণ পরিশোধ করতে হয়। বিভিন্ন সময়ে কারণে-অকারণে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িয়েছে। যে কারণে ভাড়া বাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

১৯৯১ সালে বাড়ি ভাড়া বিষয়ে একটি আইন করে সরকার। কিন্তু আইনটি যুগোপযুগী নয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এর কোনো কার্যকারিতাও নেই। এছাড়া ২০১৫ সালের ১ জুলাই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সার্বিক সমস্যা নিরসনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

ওই রায়ে বলা হয়, কমিশন সুপারিশ না করা পর্যন্ত ১৯৯১ সালের বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী সরকারের আর্থিক সক্ষমতাসাপেক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি ভাড়া-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন করে নিয়ন্ত্রক, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপনিয়ন্ত্রক নিয়োগের উদ্যোগ নেবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৫:৫৮ | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com