এস এম জুবাইদ, পেকুয়াঃ কক্সবাজারের পেকুয়ার বহু কাঙ্ক্ষিত ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৮ নভেম্বর  রবিবার(২৮ নভেম্বর) সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত এ ভোট গ্রহন শুরু হবে। তবে পেকুয়ার ছয়টি ইউপি নির্বাচনের মধ্যে পেকুয়া সদর ইউপিতে এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন করা হবে আর বাকি ৫ টি ইউপিতে গোপন ব্যালেটের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে। এ লক্ষ্যেকে সামনে রেখে ভোট গ্রহন করার জন্য উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনে নিয়োজিত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং কর্মকর্তা, পুলিশ, আনসার সদস্যরা ভোট গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে স্ব স্ব ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন। পুরো উপজেলা জুড়ে র‍্যাব, বিজিবি টহল জোরদার করেছে।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম (নৌকা), এম বাহাদুর শাহ (চশমা), এডভোকেট রাশেদুল ইসলাম (ঘোড়া), ইউসুফ রুবেল (আনারস), আলহাজ্ব ওমর রিয়াজ চৌধুরী (টেলিফোন) মাওলানা নাছির উদ্দিন (হাতপাখা), গফফার চৌধুরী (মোটরসাইকেল)। এদের মধ্যে বাহাদুর শাহ ও রাশেদ এবং জহিরুল ইসলামের মধ্যে হাড়াহাড়ি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। তবে নৌকার প্রার্থী সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম কে নিয়ে প্রার্থীরা চরম শংঙ্কায় আছেন বলে জানান প্রার্থীরা। তবে নৌকার প্রার্থীকে বিজয় নিশ্চিত করতে তৎপর সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।  সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয় করতে প্রশাসনের  নিদের্শনা রয়েছে বলে আতংকিত প্রার্থীরা।

পেকুয়া সদরে এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন হবে। এতে কোন ইভিএম পদ্ধতিতে কারচুপির মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীকে বিজয় নিশ্চিত করতে পারে এমন সংঙ্কায় আছে প্রার্থীরা। সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে চশমা প্রতীকের প্রার্থী এম বাহাদুর শাহ ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী রাশেদুল ইসলামের মধ্যে বিজয়ের শেষ হাসি হাসতে পারে বলে জরিপে এটি উঠে এসেছে।

বারবাকিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মাওলানা এইচ এম বদিউল আলম জিহাদী (চশমা), জি এম আবুল কাসেম (নৌকা)। এরাই প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। মাঠ জরিপে দেখা যায় এদের মধ্যে থেকে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই মাওলানা এইচ এম বদিউল আলম জিহাদী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং শেষ হাসি হাসবেন তিনি।

রাজাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নজরুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল (নৌকা), এডভোকেট হুমায়ুন কবির (সি এন জি), ছৈয়দ নুর (আনারস), তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী সুজন(চশমা),  সাইদুল ইসলাম রোমান (ঘোড়া)। এরাই প্রতিন্দ্বিতা করছেন। মাঠ জরিপে নজরুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল ও হুমায়ন কবিরের মধ্যে প্রতিন্দ্বিতা হবে। তবে শেষ হাসিটা হাসবে হুমায়ন কবির (সি এন জি) প্রতীক নিয়ে।

মগনামা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নাজিম উদ্দীন (নৌকা), শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম (মোটরসাইকেল),  ইউনুস চৌধুরী (ডুল), নুরুল আমিন ( অটোরিকশা)। এরা প্রতিন্দ্বিতা করছেন। তবে মাঠ জরিপে ওয়াসিম ও ইউনুসের মধ্যে হাড়াহাড়ি লড়াই হবে। শেষ পর্যন্ত ওয়াসিম (মোটরসাইকেল) নিয়ে শেষ হাসি হাসবে।

উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে এটি এম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা), এমজারুল ( আনারস), তোফাজ্জল করিম (চশমা)। এরা প্রতিদ্বিন্দতা করছেন। মাঠ জরিপে দেখা যায় তাদের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। শেষ পর্যন্ত শহিদুল ইসলাম চৌধুরী শেষ হাসি হাসবে।

শীলখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নুরুল হোছাইন (টেলিফোন), কাজিউল ইনসান(নৌকা),  আবু ছৈয়দ রনি (আনারস), কামাল হোসেন (চশমা)। এরা প্রতিন্দ্বিতা করছেন। মাঠ জরিপে দেখা যায়, নুরুল হোছাইন ও  আবু ছৈয়দ রনি এবং কামাল হোসেনের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। শেষ পর্যন্ত নুরুল হোছাইন (টেলিফোন) প্রতিকে শেষ হাসি হাসবে।

নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে জানা যায়, পেকুয়ার বহুকাঙ্ক্ষিত এই ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫০ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৮৫ জন এবং মহিলা সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তাদের প্রচারনা বন্ধ হয়েছে শুক্রবার রাত ৮টায়। নির্বাচন শান্তি পূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে শুক্রবার রাত থেকে পুরো উপজেলা জুড়ে।

উপজেলা রিটানিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, পেকুয়ার ৬ ইউনিয়নে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন ও নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিয়োজিত থাকবেন ২৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি আর সাড়ে ৩ শত পুলিশ সদস্য। এছাড়াও র‍্যাব-১৫ এর সদস্যরা নিয়মিত কেন্দ্র পরিদর্শনে রয়েছে।

র‍্যাব ১৫ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্ণেল খাইরুল ইসলাম বিকালে এক প্রেস বিফ্রিং করে সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন,  সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমরা কাজ করে যাবো এবং নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য র‍্যাব-১৫ কাজ করবে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ও জোর করে ব্যালেট পেপার ছিনতাই ও কারচুপি করতে চাইলে কঠোর ভাবে দমন করবে র‍্যাব-১৫।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছেন পেকুয়ার ছয়টি ইউনিয়নে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি এবং কেন্দ্রে দায়িত্বশীলরাও উপস্থিত হয়েছেন। তবে ব্যালেট পেপার সকালে উপজেলা রিটানিং কর্মকর্তার অফিস থেকে প্রত্যেক ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হবে।