শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পূরণ হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৪ পদ : আলোচনায় জিয়া পরিবারের সদস্যরা

  |   শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট

পূরণ হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৪ পদ : আলোচনায় জিয়া পরিবারের সদস্যরা

ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপারসনের অবর্তমানেই অবশেষে পূরণ হতে চলেছে দলের স্থায়ী কমিটির শূন্য ৪টি পদ। জিয়া পরিবারের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ রাখার লক্ষ্যে যার ৩টি পদেই থাকছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। দলের এ গুরুত্বপূর্ণ ৩টি পদে যারা থাকছেন তারা হলেন- খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমানের স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি ও বর্তমানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বে থাকা রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছেন। আগামী স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা বিষয়টি অনুমোদন করবেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলেও দলে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার মতো নেতা আছেন হাতেগোনা কয়েকজন। আন্দোলনে নেতৃত্ব, সাংগঠনিক দেখভাল, তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ পড়ে আছে এলোমেলোভাবে। তাই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মনে করছেন, দলের ভাবমূর্তি রক্ষা ও রাজনীতিতে টিকে থাকতে আগামীতে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

সে ক্ষেত্রে ভেতরে ভেতরে দলকে প্রস্তুত করার প্রয়োজনীয়তা থেকেই আপাতত গুরুত্বপূর্ণ ৪টি পদ পূরণের কথা ভাবছেন তিনি। তা ছাড়া শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও তরিকুল ইসলাম দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা তো দূরের কথা, কোনো সভা-সেমিনার বা নীতিনির্ধারণী বৈঠকেও উপস্থিত থাকতে পারেন না। এমন অবস্থায় তারেক রহমান শূন্যপদগুলো পূরণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। তবে ওই পদগুলোতে পরিবারের সদস্যদের রাখাটাই এই মুহূর্তে নিরাপদ মনে করছেন তিনি। সেই মোতাবেক গত ২ ফেব্রুয়ারি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাদা করে পরামর্শ করেছেন তারেক রহমান। জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে যে কোনো দিন স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন করা হবে।

জানা যায়, পারিবারিকভাবে দলীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন এ বিষয়ে গ্রিন সিগনাল নিয়েই গত ২৯ মার্চ ঢাকায় এসেছেন প্রয়াত কোকোর স্ত্রী সিঁথি রহমান। এসেই শাশুড়ির স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়াসহ তার সুচিকিৎসা ও মুক্তির বিষয়ে তোড়জোড় চালাচ্ছেন। খবর নিচ্ছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোরও। সিঁথির পর এবার শাশুড়ির ইচ্ছাতেই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দুয়েকদিনের মধ্যেই দেশে আসছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান। কারণ এর আগেও অসুস্থ হলে শাশুড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষার সব দায়িত্ব তিনিই পালন করতেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হওয়ায় তাকে নিয়ে দলে নানা ধরনের গুঞ্জন রয়েছে।

এর আগেও শূন্য পদে তার নাম আলোচনা হলে দলের অনেক সিনিয়র নেতাই প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় বলে তাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রকাশ্যে বাদ সেধেছে। আলোচনায় থাকা আরেক নাম শামীম এস্কান্দার। সম্পর্কে তারেক রহমানের মামা হলেও বিএনপির রাজনীতিতে তিনি অনেক আগে থেকেই জড়িত আছেন পর্দার আড়ালে। রিজভী আহমেদ খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ থেকে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তা ছাড়া রিজভী আহমেদ তারেক রহমানের বেশ বিশ্বস্ত বলে প্রচার রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত কিছু হবে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া আমার আর কিছুই জানা নেই।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলের সাড়ে চার মাস পর ৬ আগস্ট স্থায়ী কমিটিসহ বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির দুটি পদ খালি রেখে ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির দুই শূন্য পদ পূরণ না হতেই কমিটি ঘোষণার প্রায় দুই মাস পর ২৭ সেপ্টেম্বর মারা যান প্রবীণ সদস্য আ স ম হান্নান শাহ। পরের বছর ২৪ অক্টোবর মারা যান স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম কে আনোয়ারও। তার চলে যাওয়ায় এখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির চারটি পদ ফাঁকা হয়। এরপর থেকেই দীর্ঘদিনেও স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতা ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অনেকে বিভিন্নভাবে ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। তবে প্রকাশ্যে কেউ এ নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননি।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাউন্সিলের ১৫ মাস পরও বিএনপির স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ হয়নি কেবল খালেদা জিয়া ও ছেলে তারেক রহমানের মতানৈক্যের কারণে। খালেদা জিয়া তার মামলার রায় হওয়ার আগেই স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ৪ জনের নাম নিয়ে ছেলের সঙ্গে মতের মিল হয়নি তার। যার কারণে খালেদা জিয়ার চূড়ান্ত করা নামগুলো বহুদিন ধরে ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। সূত্র : ভোরের কাগজ

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:২৬ | শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com