| বুধবার, ০৪ মার্চ ২০২০ | প্রিন্ট
পানির ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার পানির দাম পাঁচবার বাড়ালেও সেটা মুখে দেওয়া যায় না। আর দাম বাড়িয়ে বিদ্যুৎ প্লান্টে সুবিধাভোগীদের জন্য জনগণের থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে এই কথা বলেন তিনি।
এ সময় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে কথা বলেন বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। বিএসএমএমইউ ডাক্তারদের সরকার বাধ্য করেছে খালেদা জিয়ার সঠিক রিপোর্ট না দেয়ার জন্য।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার যে ব্লাড পরীক্ষা হয়েছে সেখানে তার ফাস্টিং সুগার হচ্ছে ১৪.৫। চিন্তা করা যায় না। ১৪.৫ যদি তার নিয়মিত সুগার হয় তাহলে সেটা তার হার্ডে এফেক্ট করতে পারে, কিডনিতে এফেক্ট করতে পারে বা লাঞ্চে এফেক্ট করতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এতকিছুর পরেও দুর্ভাগ্য আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক পিজি হাসপাতালের ডাক্তার যাদের এদেশের মানুষ শ্রদ্ধা করে, তাদের উপর নির্ভর করে তারা আজকে সত্যি রিপোর্ট দিতে পারলেন না। এ সরকার বাধ্য করেছে সঠিক রিপোর্ট না দেয়ার জন্য।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে আজকে আমাদের দেশে বিচার বিভাগ, উচ্চ আদালত তারা সঠিক বিচার করতে পারে না। কারণ, একটা একনায়কতন্ত্র দেশ চলছে। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র চলছে।
পানির ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে পানির দাম পাঁচবার বাড়লো। কিন্তু সে পানি মুখে দেওয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৮ বার। কারণ পাওয়ার প্লান্টের নামে তারা যে লুট করেছে তার ভর্তুকি দেয়ার জন্য।
সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে মানুষের পকেট কেটে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। যদি কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে তবুও তাদেরকে ভর্তুকি দিতে হবে এই হচ্ছে তাদের চুক্তি। গতকাল জানলাম, প্রতি বছর ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই টাকা জনগণের বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে নেওয়া হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার ব্যাংকিং সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস করেছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বলতে কিছু নাই।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দুই বছর হয়ে গেল সরকারের সমস্যা সমাধান করতে পারেনি। আজকে অনেকে বলে, সরকার ইচ্ছা করে এটাকে জিয়ে রেখেছে। কারণ, এতে তাদের লাভ হয়। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে সমর্থন পাওয়া যায়। আর যে সাহায্য-সহযোগিতা আসে তার থেকে ভাগ-বাটোয়ারা পাওয়া যায়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়েই নেতাকর্মীরা কারাবন্দি দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি হাবীব-উন-নবী খান সোহেল। সকাল ১১টায় মানববন্ধন শুরু হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৌঁছান ১১টা ৫০ মিনিটে।
সকাল দশটার পর থেকেই নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাব এলাকায় আসতে থাকেন। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে মানববন্ধন শুরুর সময় তা সমাবেশে রূপ নেয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।
Posted ১৪:৩১ | বুধবার, ০৪ মার্চ ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain