শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদত্যাগ করতে পারেন হাসিনা!

  |   সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০১৪ | প্রিন্ট

hasina

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করবে ভারত। বিরোধী দলহীন নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। নয়াদিল্লির ভয়, যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশ অনুমোদন না দিলে বিপাকে পড়তে পারে শেখ হাসিনার নতুন সরকার। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা ভারতকে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বিরোধী দলের দাবি মেনে নিতে পারেন। করতে পারেন পদত্যাগ। রোববার ভারতের ইংরেজি দৈনিক ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের পর বাংলাদেশ যাতে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও নিন্দার মুখে না পড়ে, সেজন্য ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এজন্য বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো ও বিভিন্ন ফোরামের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে ভারত। প্রধান বিরোধী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ছাড়াই রোববার বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ১৪৬টি আসনে। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দল হিসেবে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

এরই মধ্যে শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন আবার ক্ষমতায় এলে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। কারণ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় আলোচক ভারতীয় আলোচকদের এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে শেখ হাসিনা বিরোধী দলের দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করতে পারেন। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কোনো শূন্যস্থান রাখতে চাননি, যাতে তৃতীয় শক্তির ক্ষমতা দখলের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর নির্বাচন করার মাধ্যমে তিনি চেয়েছেন যাতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও পূরণ হয়। শেখ হাসিনার কাছ থেকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে তাঁর দল আবারও নির্বাচন দিতে সম্মত হবে, যদি এই নির্বাচনের পর সংলাপে কোনো ফল পাওয়া যায়। নয়াদিল্লির এখন ভয়, যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশ শেখ হাসিনার নতুন সরকারকে অনুমোদন না-ও করতে পারে, যা সরকারকে বিপাকে ফেলবে।

১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ঠিক একই পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন, যেখানে হাসিনা খালেদার অবস্থানে ছিলেন। তখন বড় কোনো শক্তি মারাত্মক উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তবে সে সময় গণ-আন্দোলনে খালেদা সরকারের পতন হয়। জানা গেছে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকেরা একাধিক বৈঠক করেছেন। এর একপর্যায়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতও ভারত সফর করেন। তবে দুই দেশের মতপার্থক্যের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামী, যারা বিএনপির প্রধান মিত্র। সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জামায়াতের ব্যাপারে অনেক বেশি ইতিবাচক। এমনকি তারা এই বার্তাও বহন করেন যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে একটি বৈধ ইসলামী দল হিসেবে দাঁড়াতে শুরু করেছে। কিন্তু জামায়াতকে ভারত নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কারণ দলটির কাঠামোতে এমন কিছু মৌলবাদী উপাদান যুক্ত আছে, যা বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য মারাত্মক সন্ত্রাসী হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে কয়েক মাস ধরেই ভারতীয় আলোচকরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এমনকি তাঁরা বিএনপিকে পুরোপুরি ভারতীয় সমর্থন দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। তবে একই সঙ্গে জামায়াতের কাছ থেকেও সরে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু এই প্রস্তাবে কখনই সম্মতি দেননি খালেদা জিয়া। ভারত মনে করে, বিএনপিকে জামায়াতের বড় রকমের ক্যাডার সাপোর্ট দেওয়ার কারণেই খালেদা জিয়া ভারতের আহ্বানে রাজি হননি। এই অবস্থায় বাংলাদেশে নির্বাচন শেষে ভারত এখন বাংলাদেশ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় আলোচনা করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবে, যে রাষ্ট্রটির হাতে রয়েছে চাবিকাঠি। এ ছাড়া কমনওয়েলথসহ অন্যান্য ফোরামেও আলোচনা করতে যাচ্ছে। ভারত বর্তমানে কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাকশন গ্রুপেরও সদস্য, যার ক্ষমতা রয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়ায় বাধা দিতে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ০৬:০৩ | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০১৪

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com