| মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০ | প্রিন্ট
যাত্রীবাহী নৌযানে শারীরিক দূরত্বসহ অন্যান্য স্বাস্থবিধি কার্যকরভাবে মানা হচ্ছে না। লঞ্চে স্বাস্থ্য সুরক্ষার অভাব রয়েছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও ব্যতিক্রম দেখা গেছে ডেকের তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের। তারা শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাতায়াত করেছেন। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও লঞ্চ মালিকদের শারীরিক দূরত্ব মানাতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
সদরঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সদরঘাটের প্রবেশ মুখে বসানো হয়েছে জীবাণুনাশক টানেল। তবে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের তেমন ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু লঞ্চ থেকে নেমে যাত্রীদের টার্মিনালের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব দূরে থাক করোনা আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে কোনও বিধিই মানতে দেখা যায়নি। বেশিরভাগেরই মাস্ক থাকলেও সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রী চলাচলে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মানতে যাত্রী, লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে তারা। বিআইডব্লিউটিএ বারবার শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য মাইকিং করলেও তা মানতে দেখা যায়নি যাত্রীদের।
বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা এমভি পূবালী-৯ এর যাত্রী ইকবাল হোসেন বলেন, লঞ্চে ওঠার সময় স্যানিটাইজার করাসহ মাস্ক পড়া নিশ্চিত করলেও পরবর্তিতে আর কোনও কিছু লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। শারীরিক দুরত্বের জন্য এক মিটার দুরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও লঞ্চের ভেতর সেটা কেউ মানছেন না।
তিনি বলেন, কেবিনে যারা আসছেন তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন। কিন্তু আমার মতো যারা ডেকে বসে আসছেন তাদের এ দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়।
বরিশাল রুটের পয়সারহাট থেকে ছেড়ে আসা এমভি পূবালী-৯ এর সুপারভাইজার সজল আহমেদ বলেন, লঞ্চ চলাচলে আমরা সরকারের সব নির্দেশনা মেনে যাত্রী পরিবহন করছি। যাত্রী ওঠার সময় যাদের মাস্ক নেই তাদের লঞ্চে উঠতে দিচ্ছি না। নিয়মিত ডিটাজেন দিয়ে ধোয়া-মোছা হচ্ছে লঞ্চ। পাশাপাশি স্যানিটাইজার করা হচ্ছে প্রত্যেক যাত্রীকে। সরকারের নির্দেশ মতো অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছি। এর আগে আমরা প্রায় ৪০০ যাত্রী আনা নেয়া করলেও এখন মাত্র ১৮০ জনের বেশি যাত্রী বহন করছি না। তবে নিয়ে যাচ্ছি মাত্র ৮০ থেকে ৯০ জন যাত্রী।
শারীরিক দূরত্ব মান হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা লঞ্চের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে দাগ টেনে দিয়েছি। কিন্তু যাত্রীদের মানাতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাদের বার বার বললেও শোনে না। কেউ বলে আমরা একই পরিবারের। কোনো সমস্যা হবে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোরে যাত্রীদের একটু ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। আবার দুপুরের পর থেকে যাত্রী বাড়বে। কারণ দূরপাল্লার লঞ্চগুলো ভোর ৪টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে চলে আসে। আর ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭ টার মধ্যে। এ কারণে তখন পন্টুনে ভিড় বেশি থাকে। সে সময়ে স্বাস্থ্যবিধি যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ১০ নম্বর পন্টুন থেকে হাতিয়া ও বেতুয়ার লঞ্চ এসে ভিড়ে। সেখানে সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে। কারণ ওই অঞ্চলের সঙ্গে বাই রোড যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। তাই তাদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো লঞ্চ। ফলে ভিড় বেশি থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। বাকি ঘাটগুলোয় কোনও সমস্যা নেই। পূর্বপশ্চিমবিডি
Posted ১৭:১২ | মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain