| বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
রাজধানীর আইকন নান্দনিক সৌন্দর্যের স্থাপনা হাতিরঝিল প্রকল্প গুলশান-বারিধারা-বনানী কবরস্থান হয়ে বালু নদী পর্যন্ত সম্প্রসারিত হচ্ছে।
সেখানে থাকবে নৌপথে চলাচলের জন্য ওয়াটার বাস সুবিধা। বিনোদনের উপকরণ হিসেবে থাকবে আধুনিক পার্কিং সুবিধাসহ কনভেনশন সেন্টার ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের অপেরা হাউসের মতোই মনোমুগ্ধকর অপেরা হাউস। এর মাধ্যমে হাতিরঝিলকে দৃষ্টিনন্দন করার পাশাপাশি রাজধানীতে নৌপথে চলাচলের সুযোগ তৈরি হবে।
বুধবার গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন রাজধানীর হাতিরঝিলের ওয়াটার বাস সার্ভিস ও কনভেনশন সেন্টারের স্থান পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় তিনি রাজউক ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ওয়াটার বাসে চড়ে হাতিরঝিল প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
মন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিলে আমরা ওয়াটার বাস চালু করেছি, যা খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এরই মধ্যে হাতিরঝিল নান্দনিক রূপ পেয়েছে। আস্তে আস্তে আরো নান্দনিক রূপ পাবে। নৌপথে যাতে আরো বেশি জায়গায় রাজধানীবাসী যেতে পারে, সে জন্য আমরা আরো লেক খনন করব। যেখানে লেকের ওপর দৃষ্টিনন্দন ৮ থেকে ১২টি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। আরো লেক খনন করে এই প্রকল্প গুলশান-বারিধারা-বনানী কবরস্থান হয়ে বালু নদী পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে আমরা জলাধার সংরক্ষণের পাশাপাশি রাজধানীতে নৌরুটে চলাচলের ব্যবস্থা করছি। একসময় নৌপথে ঢাকাতে চলাচল করা যেত। পূ্র্বের এরশাদ বা জিয়া সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে লেক ভরাট করে এমপি-মন্ত্রীদের বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। এমনকি আপনারা অবাক হবেন, আজাদ মসজিদ ঢাকার লেক ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছিল। তারা আমাদের ওয়াটার বডিকে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে।’
হাতিরঝিল থেকে বিজিএমইএ ভবন অপসারণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আমাদের পক্ষে রায় পেয়েছি। হাইকোর্ট বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকে ৯০ দিন সময় দিয়েছেন। ৯০ দিনের মধ্যে তারা না ভাঙলে রাজউক রায় অনুসারে ভেঙে ফেলবে। তবে আমরা অবশ্যই র্যাংগস ভবনের মতো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভাঙব না। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভাঙব, যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।’
প্রসঙ্গত, বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেছে, যার এখনো শুনানি শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে যদি নতুন নির্দেশনা আসে তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন হাইকোর্টের রায়কেই আমরা অনুসরণ করছি।’
অপেরা হাউস ও কনফেনশন সেন্টারের বিষয়ে মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ‘হাতিরঝিলকে কেন্দ্র করে আমরা বড় একটি কনফেনশন সেন্টার করব। অত্যাধুনিক পার্কিং সুবিধাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এখানে আমরা অপেরা হাউস নির্মাণ করব। বাংলাদেশে অপেরা থিয়েটার কখনো হয়নি। এটা হলে হাতিরঝিল আরো দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্র হবে, যা তৈরি করতে অন্তত দুই থেকে তিন বছর লাগতে পারে।
প্রসঙ্গত, সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থাপত্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিডনির অপেরা হাউস, যা অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বন্দরে অবস্থিত। এটি দেখতে নৌকার পাল আকৃতির। সারা বছর অনেক ধরনের অনুষ্ঠান এখানে হয়। বিশ্বের কোটি কোটি পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এই সিডনি অপেরা হাউস। অপেরা হাউসটি মহাসাগরের এক প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে। দেখতে অনেকটা উপত্যকার মতো। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় এটিকে ২০০৭ সালে অন্তর্ভুক্ত করে।
Posted ০৮:২৮ | বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain