| রবিবার, ০৭ মে ২০১৭ | প্রিন্ট
একসঙ্গে নির্বাচন এবং এক সঙ্গে সরকার গঠনের পরিকল্পনাকে সামনে রেখে ৫৮ দলের সম্মিলিত জাতীয় জোটের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ছাড়া যে ৫৭টি দল যোগ দিয়েছে তার মধ্যে নির্বাচ কমিশনে নিবন্ধন আছে কেবল একটির। বাকিগুলো একেবারেই অপরিচিত। তাদের তেমন কোনো কার্যক্রমই নেই।
রবিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর মধ্যে আছে এম এ মান্নানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট, আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুকের নেতৃত্বাধীন ধর্মভিত্তিক ৩৫ দলের জোট জাতীয় ইসলামী মহাজোট এবং সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় জোট বিএনএর নেতৃত্বে ২১ দল।
গত কয়েক মাস ধরেই এরশাদ তার নতুন জোট গঠন নিয়ে নানা ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পর্বতের মুষিক প্রসবের মতো কাণ্ড করলেন তিনি। মোট ৫৮টি দল থাকলেও এগুলোর একটিরও সারাদেশে কার্যক্রম নেই। তারা যেমন অপরিচিত, তেমনি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাওয়ার মতো যোগ্যতাও নেই। এই দলগুলো এর আগে কখনও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি অথবা অংশ নিলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পায়নি।
তবে এই দলগুলো নিয়েই দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চান এরশাদ। পাশাপাশি নির্বাচনে ভালও করতে চান। তিনি বলেন, জোটের দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য রাজনৈতিক বিপদে আপদে সুদিনে-দুর্দিনে শরিকরা একে অপরের পাশে থাকবে। আমাদের অঙ্গিকার থাকবে নীতিমালা লঙ্ঘন ব্যাতিত কোনভাবে স্বার্থের বশবর্তী হয়ে কেউ জোট ছেড়ে যাব না।’
জোট গঠনের কারণ ব্যাখ্যা করে এরশাদ বলেন, বর্তমানে সংসদীয় গণতান্ত্রিক বিশ্বে জোটগত রাজনীতির প্রবণতা বিরাজ করছে। আমাদের দেশেও এই ধারা অব্যাহত আছে। আমরাও এই প্রবণতার বাইরে নই। জোটের রাজনীতির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সৌহার্দ স্থাপনের সুযোগ থাকে। যা সংঘাতের রাজনীতির বিপরীতে সম্প্রীতির রাজনীতি প্রবর্তন করতে পারে। এ কারণেই আমরা জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে জোট গঠনের ঘোষণা দিলাম।’
আগামী নির্বাচনে এই জোট অংশ নেবে জানিয়ে এরশাদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনার চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতাকে প্রধান্য দেয়া হবে। জাতীয় নির্বাচনে জোটের যৌথ ইশতেহার প্রণয়ন করা হবে। এই জোট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে। ফল যাই হোক না কেন জোট বহাল থাকবে।’
এই জোটে কোন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জায়গা হবে না জানিয়ে এরশাদ বলেন, রাজনৈতিক নীতি আদর্শের দিক থেকে আমরা সবাই স্বাধীনতার চেতনা, ইসলামী মূল্যবোধ তথা সকল ধর্মের প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ আদর্শকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাব। এই জোটে কোন স্বাধীনতা বিরোধী যারা দেশের বিরোধীতা করেছিল তাদের জায়গা হবে না।
সম্মিলিত জাতীয় জোটের চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, যে সকল দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত আছে তারা সরাসরি এই জোটের শরীক হিসেবে থাকবে। আর যারা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বা নিবন্ধিত হবার অপেক্ষায় আছে তারা সকলের সমন্বয়ে মোর্চা গঠন করবে, সেই জোটকে আমাদের শরীক হিসেবে বৃহত্তর জোটে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
এরশাদ বলেন, প্রথম পর্যায়ে এই জোটে ২টি নিবন্ধিত দল এবং ২টি জোট নিয়ে আমরা বৃহত্তর জোট ঘোষনা করছি। এছাড়া আরও ২টি নিবন্ধিত দল আমাদের সাথে জোটে অন্তর্ভূক্ত হবার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
জোটের চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, আমাদের নীতি ও আদর্শের সাথে যারা ঐক্যমত পোষণ করবে তাদের জন্য আমাদের দরজা খোলা থাকবে। সময়ের দাবীতে দেশ জাতি গণতন্ত্র এবং সংবিধানের স্বার্থে বৃহত্তর ঐক্যের কোন বিকল্প নাই বলেও মন্তব্য করে এরশাদ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রমূখ।
Posted ০৮:১২ | রবিবার, ০৭ মে ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain