| শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
শহীদ আসাদ দিবস আজ শুক্রবার। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ১১ দফা আন্দোলনের হরতাল চলাকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আসাদুজ্জামান। সেই থেকে এ দিনটি শহীদ আসাদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আসাদ ছিলেন নরসিংদীর সন্তান।
শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামের শহীদ আসাদের মাজার জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন। দুপুরে শহীদ আসাদ কলেজ ও শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গালর্স হাই স্কুলের উদ্যোগে মান্নান ভূইয়া চত্ত্বরে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভার।
এ ছাড়া শিবপুর সরকারী শহীদ আসাদ কলেজের ছাত্র-শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগেও আয়োজন করা হয়েছে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার।
শহীদ আসাদের পুরো নাম আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি ১৯৪২ সালের ১০ জুন হাতিরদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আবু তাহের হাতিরদিয়া সাদত আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক।
১৯৬০ সালে মেট্রিকুলেশনের পর ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে বড় তিন ভাইকে অনুসরণ করে বিজ্ঞান পড়ার জন্য এইচএসসিতে ভর্তি হন এবং এক বছর লেখাপড়া করেন। পরে সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজে ভর্তি হন। এ সময় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সেখান থেকে বিএ (অনার্স) এবং এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা সিটি ল কলেজে এলএলবি কোর্সে ভর্তি হন। ফলাফল আশানুরুপ না হওয়ায় ওই বছরেই দ্বিতীয়বার মানোন্নয়নমূলক পরীক্ষা দেন। কিন্তু জীবদ্দশায় এ পরীক্ষার ফলাফল আসাদ দেখে যেতে পারেননি তিনি।
১৯৬৯ সালে ১৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটির সমাবেশ থেকে ১১ দফা দাবিতে এবং পুলিশ-ইপিআর বাহিনীর ছাত্র-জনতা ওপর বর্বর নির্যাতনের প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি পূর্ণ দিবস হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ দিন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ডাকা হয়। গভর্নর মোনায়েম খান ওই দিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেন। ১১ দফা দাবিতে প্রায় ১০ হাজার ছাত্রের বিশাল মিছিল ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। আসাদসহ কিছু ছাত্র ছত্রভঙ্গ মিছিলটি আবার সংগঠিত করে ঢাকা হলের (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময়ই পুলিশের গুলিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়কে আসাদ শহীদ হন।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) গ্রুগের নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল শাখার সভাপতি আসাদের মৃত্যুতে আন্দোলনের অগ্নিশিখা জ্বলে উঠে। শহীদ আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে পরদিন রাজধানী ঢাকায় বের হয় স্মরণকালের বৃহত্তর শোক মিছিল। বিক্ষোভের নগরীতে পরিণত হয় প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকা। বিক্ষুব্ধ জনতা ছুটে যান মোহাম্মদপুরের তৎকালীন আইয়ূব গেটের সামনে এবং আইয়ূব গেটের নামফলক গুড়িয়ে দিয়ে রক্ত দিয়েই লেখেন আসাদ গেট। সেই থেকে মোহাম্মদপুর আসাদ গেটের জন্ম।
Posted ০৬:১২ | শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain