| বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে ২০-দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপাসনের ডাকা বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯ টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের নিজ কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়।
সাবেক সচিব কেএম নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পাঁচ সদস্যের যে নতুন নির্বাচন কমিশন করেছেন তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দেরই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনতার মঞ্চের একজন সংগঠক ছিলেন। অথচ কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারেন না। এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া সরকারি চাকরি বিধির নিদারুণ লংঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত নুরুল হুদা মিউনিসিপাল ডেভলোপমেন্ট ফান্ড নামের সরকারের একটি প্রজেক্টের এমডি হিসেবে সরকারের লাভজনক পদে অফিসের প্রফিটে কাজ করেছেন। আমরা সরকারি চাকরি শেষে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিতদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ না দেয়ার প্রস্তাব করেছিলাম এই জন্যই যে সরকারের অনুগ্রহভাজনদের এসব পদে নিয়োগ দেয়া হয়।’
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম কারও কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ বা কারও প্রতি ক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি যেন নির্বাচন কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না পান। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাই হয়েছে। এসব কারণে স্বাভাবিকভাবেই জনমনে কে এম নুরুল হুদার সম্পর্কে নেতিবাচক উপলব্ধির সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সার্চ কমিটি মহামান্য রাষ্ট্রপতির বিবেচনায় না নেয়া খুবই রহস্যজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে ইসি গঠনে যে রুদ্ধশ্বাস দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা অনেকের মনেই সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় সন্দেহ হলো—কাদেরকে নির্বাচন কমিশনে রাখা হবে, সেটি ছিল শাসক মহলের পূর্ব পরিকল্পিত। এতে ২০ দলীয় জোট হতাশ ও নিরাশ।’
মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এমন একজন বিতর্কিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান নির্মহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। বিশেষকরে তা নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান যদি হয়। কাজেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না। এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে।’
‘রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেব’— প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আসলে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। সাংবিধানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী দুটো বিষয় ছাড়া (প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ) অন্য সব বিষয়ে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করতে পারি, নতুন ইসি গঠনে প্রধানমন্ত্রীর পছন্দেরই প্রতিফলন ঘটেছে।’
এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে শরিক দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ০৫:৩৮ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain