শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও তেল বিক্রি বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

  |   সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও তেল বিক্রি বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

তেল বিক্রির কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিকদের কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। গতকাল থেকেই রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির ডাকে ২৬ জেলায় চলছে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘট। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট সোমবারও অব্যাহত থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। এছাড়া কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়ির জেনারেটরের তেল নিতে আসা গ্রাহকদেরকেও পড়তে হয়েছে বিপাকে।

পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ মোমিন দুলাল বলেন, তাদের ১৫ দফা দাবি পূরণ করতে সরকারকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জ্বালানি মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা ধর্মঘটে যেতে ‘বাধ্য হয়েছেন’।

তাদের ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ কমিশন দেওয়া, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান- বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের জন্য ৫ লাখ টাকার দুর্ঘটনা বীমা, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণের নিয়ম বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

ধর্মঘটের কারণে গতকাল সকাল থেকে তিন বিভাগের কোনো পেট্রোল পাম্প থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে না। জ্বালানি তেল না পাওয়ার কারণে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন বিপাকে। যারা ধর্মঘটের খবরে আগাম জ্বালানি তেল সংগ্রহ করেছিলেন তারাই কেবল এখন মোটরসাইকেল চালাতে পারছেন। বাকিরা বিপাকে পড়েছেন।

আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার রংপুরের বেশ কয়েকটি পাম্পে কোনো পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি তেল ডিজেল, পেট্রল, অকটেন বিক্রয় হচ্ছে না। তেল নিতে গিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে সবাইকে।

সাইফুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ভেবেছিলাম আজ হয়তো তেল বিক্রি হবে। তাই বাইক নিয়ে তেল নিতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি তেল দেওয়া হচ্ছে না। এখন গাড়ি ঠেলে আমাকে ফিরতে হবে।

একই কথা জানান আরেক মোটরসাইকেল আরোহী বিপুল। তিনি বলেন, গত দুইদিন ধরে গাড়ি বের করিনি। সকালে এসে দেখি দড়ি দিয়ে ঘিরে রেখেছে, তেল বিক্রি বন্ধ। খোলা বাজারেও তেল মিলছে না। রেজা ও সাজ্জাদের মতো অনেকেই পাম্পে তেল নিতে গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

এদিকে খুলনা ও রাজশাহী প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন সেখানেও ধর্মঘট চলছে। কোন তেল বিক্রি হচ্ছে না। এতে বাড়তি টাকা দিয়ে অটোতে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ফলে প্রথম দিনে রোববার যানচলাচলে তেমন প্রভাব না পড়লেও আজ (সোমবার) থেকে প্রায় অচল হয়ে যেতে পারে তিন বিভাগের সড়কপথ। সেই সঙ্গে বিপর্যস্ত হবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। তেল উত্তোলন করতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সব ধরনের পরিবহন চালকরা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগের সব জেলায় এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয় খুলনার দৌলতপুর ডিপো থেকে। আর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে তেল সরবরাহ করা হয় সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপো থেকে। ধর্মঘটের কারণে এই দুই স্থানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপো থেকে গতকালের মতো আজও তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ তেল বিক্রি শুরু হবে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারছেন না কেউই।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৩৯ | সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com