| শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট
নিজ কর্ম মেধা ও যোগ্যতা দ্বারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও দেশের মধ্যে এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ক্ষমতা চলাকালীন সময়ে বার বার তাঁর নেতাকর্মীদের তাগাদা দিয়ে থাকেন সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার জন্য।কারন তিনি জানেন সৎ ও ন্যায়ের পথে থাকলে মানুষের পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না।সেটা তিনি তার নিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে এবার তা প্রমাণ করে দিলেন।আজ সারাবিশ্বের শীর্ষ ১০০ জন চিন্তাবিদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব এখন অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকে বাংলাদেশের দিকে।
সাবাস শেখ হাসিনা! পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়। জ্বলেপুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ কবি সুকান্ত লিখেছিলেন সাবাস বাংলাদেশ। কিন্তু আজ বাস্তবতা ‘সাবাস শেখ হাসিনা’। শেখ হাসিনা আজ শুধু একটি নাম কিংবা নিছক একজন দলীয় প্রধান নন, তিনি একাধারে সরকার প্রধান এবং বিশ্বদরবারে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, বিশ্বশান্তির অগ্রদূত এবং গণতান্ত্রিক উন্নয়নের প্রতিষ্ঠান। নতুন বাংলাদেশের উন্নয়নের রূপকার।
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা অপরিহার্য। স্বাধীনতার পর নজিরবিহীন উন্নয়ন কেবল শেখ হাসিনার আমলেই প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছেন জীবনভর। তার রক্তের যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনাও একই পথের যাত্রী। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এর চেয়ে বড় গৌরবের বিষয় আর কিছু নাই।আমরা বাঙালি জাতি হিসাবে বিশ্ব দরবারে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলাম। গত ১০ বছরে বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১০টি বিভাগে ১০ জন করে সেরা ব্যক্তিত্ব বেছে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১০০ জনের তালিকা। টানা তৃতীয়বার সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় বসার পর পরই শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই নয় দেশবাসীর জন্যও এটা বড় সুখবর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ‘দ্য ফরেন পলিসি’ বিশ্বের সেরা চিন্তাবিদদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। সাময়িকীটি তাদের ১০ম বার্ষিকীর বিশেষ সংস্করণে এসব চিন্তাবিদের নাম ও কাজের বর্ণনা প্রকাশ করেছে। সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর শেখ হাসিনা তালিকায় জায়গা করে নেয়ার কারণ হলো, গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বসবাসের জায়গা করে দেয়া।
‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ঢুকে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ জনের সংক্ষিপ্ত এই তালিকায় রাশিয়ার পরেই আছেন শেখ হাসিনা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ভ্লাদিস্লাভ সুরকভ আছেন অষ্টম অবস্থানে। আর শেখ হাসিনার অবস্থান নবম।
‘প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা’ বিভাগে শীর্ষে আছেন ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার কাসেম সুলাইমানি। তিনি গত দুই দশক ধরে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এরপর যথাক্রমে আছেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উর্সুলা ফন ডার লেয়ান, মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওলগা সানজেন করডিরো, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ, স্পেসএক্স-এর প্রেসিডেন্ট গুয়েনে শটওয়েল, প্যালানটায়ার-এর প্রতিষ্ঠাতা অ্যালেক্স কার্প, বেলিংক্যাট এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়ট হিগিংস, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগী ভ্লাদিস্লাভ সুরকভ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র ও মৎস্যবিষয়ক মন্ত্রী সুশি পুদজিয়াৎসুরি।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। তিনি অনেক ক্ষেত্রে তার বিরোধীদের প্রতি উদারতা কম দেখান। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দেশটির রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা চালায়। ভয়ে বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। রোহিঙ্গাদের দেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের দৃষ্টি কেড়েছেন তিনি। এখন শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে তৎপরতা শুরু করেছেন। নিরাপত্তার কারণে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার পক্ষগুলো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করছে। তা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকার লাখো রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরার পথ তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসের করা বিশ্বের ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় ছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালে নভেম্বরে করা ওই তালিকায় ৩০তম অবস্থানে ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে ‘লেডি অব ঢাকা’ আখ্যায়িত করে ফোর্বস-এ বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহায়তার অঙ্গীকার করেছেন এবং তাদের জন্য ২০০০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছেন, যা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির অবস্থানের পরিষ্কার বিপরীত। এই সাময়িকীর ২০১৬ সালের তালিকায় তিনি ছিলেন ৩৬তম অবস্থানে।
২০১৪ সালে এশিয়ার প্রভাবশালী শীর্ষ ১০০ জনের তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান ছিল ২২তম।২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় সপ্তম স্থানে শেখ হাসিনা ছিলেন। ২০১০ সালে নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় শেখ হাসিনা ৫৯তম স্থানে ছিলেন। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম। ফোর্বস-এ প্রথম ১০০ সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে ৫৯তম স্থান অর্জন।
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
ইউএন উইমেন থেকে প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম থেকে এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার, ইউনেসকো থেকে ‘হুপে-বোয়ানি’ শান্তি পুরস্কার, সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ থেকে মাদার তেরেসা পুরস্কার, মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন কর্তৃক এম কে গান্ধী পুরস্কার, আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক Medal of Distinction ও Head of State, খাদ্য ও কৃষিসংস্থা থেকে চেরেস, রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ কর্তৃক পার্ল এসবাক, ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার, ইউনেসকো ‘শান্তিবৃক্ষ’ চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ, সাউথ সাউথ পুরস্কার লাভ করেন।আমরা দেশবাসী আমাদের দেশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য প্রত্যেকে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।কারন আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জন করা যতবড় কঠিন তার চেয়েও বেশী কঠিন হলো অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
Email-ganipress@yahoo.com
Posted ১০:২১ | শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin