| বুধবার, ১৮ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
বিএম. শাওন, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এই প্রথম বারের মত অসময়ে নতুন জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়ে নিজে লাভবান হবার সাথে সাথে এলাকায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন কৃষক মো. জাকির হোসেন শেখ। জমির ভেড়িতে বাঁশের মাঁচায় ঝুলছে জাকিরের ৩ প্রজাতির তরমুজ। যা দুর থেকে দেখলে মনে হবে মাচায় লাউ–কুমড়ো ঝুলছে। কিন্তু কাছে গেলেই দেখা যাবে লাউ–কুমড়ো নয় এ নতুন জাতের এক তরমুজ। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকই এখন নতুন জাতের এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন ।
উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ গ্রামের মৃত আ. আহাদ শেখের ছেলে কৃষক জাকির হোসেন শেখ (৪৫)। পেশায় দাখিল মাদরাসার চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী। ভাগ্য বদলাতে বেছে নেন কৃষিকাজ। ঘেরে মাছের চাষের পাশপাশি ঘেরের ভেড়িতে করেন নানা ধরনের শাক–সবজির চাষ। চলতি বছর ৪ বিঘা জমির একটি প্রজেক্টে গ্রহন করে মাছ এবং শাক–সবজি চাষের পাশাপাশি ৩ প্রজাতির তরমুজ ও ৩ জাতের কুল চাষ করেন। তার প্রজেক্টে সার্বক্ষনিক পরিচর্যায় নিয়জিত রয়েছে ২ জন শ্রমিক। তার কৃষি প্রজেক্টে উৎপাদিত ৩ জাতের তরমুজের মধ্যে হলুদ বা গোল্ডেন কালারের ‘মধুমালা’ নামের তরমুজ অন্যতম। অন্য ২ প্রকারের তরমুজ হলো কালো ও বাংলালিংক ছাপা কালারের। প্রথম বারের মতো এ এলাকায় নতুন জাতের তরমুজ চাষে নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষের মনেও সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছেন কৃষক মো. জাকির হোসেন শেখ।
সফল চাষি জাকির হোসেন শেখ জানান, ইউটিউভ চ্যানেল দেখে তিনি তরমুজ চাষাবাদে আগ্রহী হন, তবে হলুদ জাতের ‘মধুমালা’ তরমুজের প্রতি তার আকর্ষণটা বেশী ছিলো। যেই ভাবনা সেই কাজ সংগ্রহ করেন তরমুজের বীজ। মে মাসে রোপন করে জুলাই মাসেই ফলন পাওয়া শুরু করেন। এ তরমুজের জীবনকাল ৬৫–৯০ দিন । রোদের তামপাত্রা ও মাউশিং শিপট ছাড়া এ তরমুজ চাষ করা সম্ভব নয়। এ বছর তিনি ৪ হাজার তরমুজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। বছরে ৩ বার এ তরমুজ উৎপাদন করা সম্ভব। খুবই সুমিষ্ট এ তরমুজ উৎপাদনে তার ব্যয় হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। তবে প্রথম বারেই তিনি ৩ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী। কৃষক জাকির হোসেন শেখ আরও জানান, এ প্রজাতির তরমুজ চাষ করে বছরে ৮–১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপ–সহকারী কৃষি অফিসার দিপংকর সমাদ্দার বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন প্রজাতের ফসল উৎপাদনে কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী এ অঞ্চলে এই প্রথমবারে নতুন জাতের তরমুজের বাম্পার ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে। বাম্পার ফলন দেখে আগামীতে অন্যান্য কৃষকও তরমুজের চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপজেলা (ভাপ্রাপ্ত) কৃষি অফিসার সিফাত আল মারুফ বলেন, নতুন প্রজাতির তরমুজের বাম্পার ফলনে অন্যান্য কৃষকরাও উৎসাহিত হচ্ছে। লাভজনক ফসল উৎপাদন করে কৃষক জাকির শেখ এখন এ জেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
Posted ১৭:১৪ | বুধবার, ১৮ আগস্ট ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Rafiq Masum