| মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০১৪ | প্রিন্ট
ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি আইন দিয়ে তৈরি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের চরিত্র আলাদা এদের একটি অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে। তাই দুদককে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করা উচিত বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা। একই সঙ্গে দুর্নীতিকে সহনীয় পর্যায়ে আনতে রাজনীতিবিদ বড় ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৪ উপলক্ষে ‘রাজনৈতিক ঐক্য ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে প্রধান নিয়ামক’ বিষয়ক আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সঞ্চালনায় ছিলেন বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।
এ সময় আবু হেনা বলেন, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হলে রাজনীতিবিদের কাছে আসতে হবে। দেশের ভালো-মন্দ সব কাজের সঙ্গে রাজনীতিবিদরা জড়িত। রাজনীতিবিদদের সংস্কার বোধ থাকতে হবে এবং সংস্কারবাদী হতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে দুর্নীতি কমবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, জনমত তৈরি রাজনীতিবিদরাই করতে পারে। জনমত সৃষ্টি করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করতে পারে রাজনীতিবিদরা।
আবু হেনা বলেন, দুর্নীতি সহনীয় করতে টিআইবি’র রোল রয়েছে জেলায় জেলায় কমিটি করে জনগণকে সম্পৃক্ত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে হবে বলে তিনি জানান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণ হয়ে গেছে। নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতি-পদাবনতি এ সব প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিয়ম অনুসারে না হলে প্রশাসন কখনো দলীয়করণমুক্ত হতে পারবে না।”
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজে ন্যায়বিচার বলে কিছু নেই। কমিশনের শক্তিও সীমিত।’
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, “পত্রিকাতে ভুল সংবাদ ছাপা হলে অনেক সময় দেখা যায় সরকার তার প্রতিবাদ জানায়। তবে বাকি সত্য সংবাদগুলোর জন্য সরকার তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। যারা রাজনীতি করেন, তারা না চাইলে কিছুই হবে না।”
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “সমাজে অনুসরণ করার মতো সৎ মানুষ কমে গেছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে বর্তমান সরকারকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। দুদককে শক্তিশালী করতে পারলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমবে।”
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ বলেন, “দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিটি মানুষের জন্য সুশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।”
সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “বর্তমানে দুর্নীতি এমনভাবে ছড়িয়ে গেছে যে, সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেব কোথা?- এমন অবস্থা হয়েছে। আমাদের দেশের প্রধান দুই দলের মধ্যে আর কোনো ঐক্য না থাকলেও একটি বিষয়ে ঐক্য আছে, তা হলো লুটপাটের ঐক্য। এর কারণ হলো, তারা দুর্নীতিবাজদের কাছে জিম্মি।”
সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে হলফনামা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা চরিত্র হনননামায় পরিণত হয়েছে।”
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক বলেন, “দরিদ্র জনগণ কখনো দুর্নীতি করে না ধনী সম্প্রদায় দুর্নীতির মূল উৎস।”
সেমিনারে দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, এমপি মমতাজ বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১৫:০৬ | মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০১৪
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin