| বৃহস্পতিবার, ০৩ মার্চ ২০২২ | প্রিন্ট
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজপথের কর্মসূচি থেকে জাতীয় পার্টির নেতারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, দলবাজি বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এসব বন্ধ না হলে রাজপথ না ছাড়ারও ঘোষণাও দিয়েছেন জাপা নেতারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজয় নগর থেকে পল্টন পর্যন্ত মানববন্ধনে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
চাল, ডাল, আটা, সয়াবিন তেল, গ্যাস সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় পার্টি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু সরকারের উদ্দেশে বলেন, যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, যদি দেশের দুর্নীতি বন্ধ করা না হয়, যদি দেশের টাকা পাচার বন্ধ না হয়, টেন্ডারবাজি, দলবাজি আর চাঁদাবাজি বন্ধ না হয় তাহলে জাতীয় পার্টি আর রাজপথ ছাড়বে না। আমরা গণমানুষের দাবি নিয়ে গণমানুষকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
বাংলাদেশ এখন কঠিন সময় অতিবাহিত করছে মন্তব্য করে চুন্নু বলেন, যখন দেশে দ্রব্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সংসার চালাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালে যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের সবার কর্মসংস্থান হয়নি। সব মিলিয়ে দেশে বেকারের সংখ্যা অন্তত ৫ কোটি। এমন বাস্তবতায় যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে তাতে মনে হয় দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই। সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না, মানুষের মনের ভাষা বোঝে না।
জাপা মহাসচিব বলেন, সাধারণ মানুষের অভিযোগ, যারা সরকারি দল করে তারাই শুধু ভালো আছে। দেশে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর দলবাজি করে একটি শ্রেনী ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে। আর দেশের বেশির ভাগ মানুষ দিনদিন আরো গরীব হচ্ছে। মানুষের আয় নেই কিন্তু ব্যায় বেড়েছে কয়েকগুন।
চুন্নু বলেন, ১৯৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এরপর থেকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি বারবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে বাজার ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে।
এরশাদের আমলের সঙ্গে বর্তমান সময়ের দ্রব্যমূল্যের পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেন তখন প্রতি কেজি চালের দাম ছিলো ৮ থেকে ১০ টাকা। এখন গত ৩১ বছরে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়ে বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সে সময় যে সয়াবিন তেল ২০ থেকে ২৫ টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে এখন তা ১৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার পেট্রোল এর দাম ছিলো ৭ থেকে ১০ টাকা লিটার এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার পেট্রোল।
জাপা মহাসচিব আরও বলেন, এভাবে নিত্য পণ্যের দাম বাড়লে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠবে। এরমধ্যেও নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে তা হবে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এদেশের মানুষ এমন গণবিরোধী সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টি এমন বাস্তবতায় ঘরে বসে থাকবে না। আমরা মানুষের সকল অধিকার সুরক্ষিত করতেই রাজনীতি করছি। আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকব। গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে আমরা কখনো আপোষ করবোনা।
সকাল থেকেই জাতীয় পার্টির বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মিছিল নিয়ে মানববন্ধনে যোগ দেন।
এসময় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান ও মহিলা পার্টির আহ্বায়ক সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, এসএম ফয়সাল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মো. এমরান হোসেন মিয়া প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য- গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, ফখরুল ইমাম, সুনীল শুভ রায়, নাজমা আক্তার , উপদেষ্টা- রওশন আরা মান্নান, ড. নূরুল আজহার শামীম, নূরুল ইসলাম তালুকদারসহ অনেকে।
Posted ০৯:৪০ | বৃহস্পতিবার, ০৩ মার্চ ২০২২
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain