বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ফিরছেন রাজধানীতে

  |   রবিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ফিরছেন রাজধানীতে

ডেস্ক রিপোর্ট: স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ। ছুটি শেষে শনিবার বিকেল থেকেই বরিশাল লঞ্চঘাট টার্মিনাল ও নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে ফিরতে শুরু করে দিয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের কর্মজীবীরা। যথা সময়ে কর্মস্থলে ফেরার তাড়া থাকায় যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তবে ঈদের তৃতীয় দিনেও যাত্রীদের নিরাপত্তায় বন্দর এলাকা ও টার্মিনাল এলাকায় আনসার, বিআইডবিউটিএ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। বাস র্টামিনালে মেট্রোপলিটন পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, পোশাকধারী পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি রয়েছে যাত্রীদের চোখে পড়ার মতো। যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবার মধ্যে মেরিন ক্যাডেট ও স্কাউটদের সহায়তায় বন্দর এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা হচ্ছে।

ঘরমুখো মানুষকে ভাড়া গুলতে হচ্ছে দ্বিগুণ। কোনও কোনও রুটে তিনগুণ। দূরপাল্লার টিকিটের পাশাপাশি ঈদ বকশিশের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হয়েছে রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীদেরও।

অভিযোগ রয়েছে, শুধু জেলার বাইরেই নয়, নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট,সদর রোডসহ বিভিন্ন স্থান হতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যাওয়া এবং দূরপাল্লার যানবাহন ষ্টেশন হতে শহরের মধ্যে যাতায়াতকারি মানুষের কাছ থেকেও নির্ধারিত ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি আদায় করে নিচ্ছেন পরিবহনকারীরা।

এদিকে লোড সাইন অতিক্রম করার আগেই লঞ্চগুলোকে নৌ-বন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য করায় স্পেশাল সার্ভিসে লঞ্চের টাইম-টেবিল অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।

লঞ্চঘাট ও বাস টার্মিনালে গন্তব্যে যেতে অপেক্ষমানদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ ও সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রবিবার থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলবে। এ কারণে রাজধানী ছেড়ে আসা মানুষগুলো কর্মস্থলে যোগ ফিরে যাচ্ছেন।

রবিবার যাদের অফিসে যোগ দিতে হবেই তারা শনিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চল থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এদের কেউ কেউ ভোর রাত, আবার কেউ কেউ ভোরে কিংবা সকালে রওনা দিয়ে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (২৫ আগস্ট) বিকেল থেকেই লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চগুলোর ডেকের যাত্রীরা অবস্থান নেওয়ায় তা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। পাশাপাশি স্পেশাল সার্ভিসের আওতায় আজকের দিনের লঞ্চের কেবিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে যাওয়ায় কোনও কেবিন খালি নেই।

বরিশাল লঞ্চ ঘাটে মফিদুল নামে একজন কর্মজীবী বলেন, বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে কোরবানির ঈদ পালন করতে রাজধানী ছেড়ে বাড়িতে এসেছি। ঢাকার মিরপুরে একটি সু-কোম্পানিতে ছোট একটি পদে চাকরি করি। ছুটি শেষে যতদিন বরিশালে থাকবো ততদিন বেতন থেকে টাকা কাটবে। তাই ঈদের তৃতীয় দিন ছুটি শেষে চলে যাচ্ছি ঢাকার শহরে কর্মস্থলে।

বরিশাল নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় একই চিত্র। শেষ মুহূর্তের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে একটু আগে-ভাগে ফিরছেন বলে জানান ঢাকার সাভারের গামেন্টস কর্মী জাহানারা। ঝালকাঠী থেকে বরিশাল এসে ঢাকায় যাওয়ার জন্যে অপেক্ষমান শামীম আহমদ নামের এক চাকরিজীবী জানান, ‘রবিবার সকালে অফিসে যোগ দেওয়ার তাগিদে শনিবার দুপুরেই বরিশাল ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে বাস টার্মিনালে এসে দাড়িয়ে রয়েছি।’

তবে বাড়ি ফেরা অনেকে আবার ঈদের ছুটির পাশাপাশি অতিরিক্ত দু’-এক দিন ছুটি নিয়ে পরে রাজধানীতে যাবেন। লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান যাত্রীর চাপ আগামী শুক্রবার (৩১ জুন) পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন লঞ্চ মালিকরা। বাড়তি যাত্রীর চাপ সামাল দিতে সার্বিক প্রস্তুতিও সেরে রেখেছেন তারা।

বরিশাল নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, ঈদের পর তৃতীয় দিন রবিবারে বরিশাল নদীবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকার উদ্দেশ্যে ১৬টি লঞ্চ যাত্রার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সরকারি দু’টি রকেট ও ভায়া রুটের আরো বেশ কয়েকটি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। বরিশাল বিআইডবি¬উটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকতারা জানান, ছুটি শেষে মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। তাই যাত্রীচাপ একটু বেশি।

যাত্রীসংখ্যা বাড়লেও ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদীবন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়তে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার। তিনি জানান, নিরাপদ যাত্রার লক্ষে লঞ্চ মালিক, মাস্টার-ড্রাইভার ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে ঈদের আগেই সভা ও মোটিভেশন ওয়ার্ক করা হয়েছে।

এছাড়া বেশ কিছু সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা ও বন্দর এলাকায় যাত্রীসহ সবার সচেতনতায় মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

বরিশাল নতুল্লাবাদ টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন বলেন, ঈদ ছুটি শেষ তাই যাত্রীর চাপ বেশি। সেজন্য কিছুক্ষণ পর পরই ছেড়ে যাচ্ছে সড়ক পরিবহনগুলো। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:৪০ | রবিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com