| রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট
সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের মামলার তদন্ত তিন বছর ধরে থমকে আছে একই জায়গায়। দেশ তোলপাড় করা হত্যাকান্ডের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশ ‘গ্রেফতার’ করতে পারেনি খুনের মাস্টারমাইন্ড কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারকে। জানতে পারেনি কী কারণে খুন হয়েছেন মিতু। রহস্য উন্মোচিত না হওয়ায় পুলিশের আচরণকে সন্দেহের চোখে দেখছে মিতুর পরিবার। একইভাবে মুছার পরিবারও পুলিশ রহস্যজনক আচরণ করছে বলে দাবি করছে। মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পুলিশ এ খুনের রহস্য উন্মোচন করতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে না। তাদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, কাউকে রক্ষার মিশনে নেমেছে তারা।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আলোচিত এ মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ মামলার বিষয়ে কোনো কিছুই এখন পুলিশের কাছে অজানা নয়। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারব।’ মিতু ও মুছার পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘তাদের অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশ আন্তরিকতার সঙ্গে এ খুনের মামলা তদন্ত করছে। তদন্তে যার যার নাম উঠে এসেছে, তাদের আসামি করা হচ্ছে। কাউকে রক্ষা করার ভূমিকা পালন করছে না পুলিশ।’
মুছার স্ত্রী পান্না আকতার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই মুছাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর থেকে তার কোনো হদিস নেই। মুছা যদি অপরাধ করে থাকে, তাহলে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে তার বিচার করা হোক।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘এখন পুলিশের আচরণই আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। পুলিশ মুছাকে লুকিয়ে রেখে বড় কাউকে রক্ষার মিশনে নেমেছে।’
সাবেক এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের পর দেশজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। শুরুতে এ খুনের পেছনে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে প্রশাসনের সন্দেহ হলেও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ‘আইএস’ খুনের প্রতিবাদে বিবৃতি দিলে মোড় নেয় মামলার তদন্তে। খুনের এক মাসের মধ্যেই গ্রেফতার হয় কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সাতজন। পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী। বন্দুকযুদ্ধের পর একই বিন্দুতে স্থির থাকে এ খুনের তদন্ত। এর পর থেকে এ খুনের আর কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি পুলিশ। তখন থেকে পুলিশ ‘তদন্ত’ ও মুছা সিকদার লুকিয়ে আছে এ অজুহাতে পার করেছে তিন বছর। যদিও মুছার পরিবার দাবি করে আসছে, ঘটনার কয়েক দিন পর মুছাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তার কোনো হদিস পাচ্ছে না পরিবার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়নি বলে মিতুর পরিবার এ ধরনের অভিযোগ করছে। তবে মামলার তদন্তে আমরা সঠিক পথে আছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ মামলার চার্জশিট দিতে পারব। তখন মিতুর পরিবারের সব ভুলের অবসান হবে।’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আকতার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার কয়েক মাস পর থেকে এ ঘটনার জন্য বাবুল আকতারকে দায়ী করে আসছে মিতুর পরিবার।
Posted ১১:৫৭ | রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৯
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain