বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় ভোট, জানেন না অনেক ভোটারই

  |   মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট

ঢাকায় ভোট, জানেন না অনেক ভোটারই

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার (২৬ ফেরুয়ারি) মধ্যরাতেই। আরপিও অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে আগামী ২ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকার সকল নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা ও সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই দুই সিটি নির্বাচনকে ঘিরে তেমন আগ্রহ নেই ভোটারদের মাঝে।

তফসিলের পর থেকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম ছাড়া আর কারো তেমন কোন প্রচারণাই দেখা যায়নি নির্বাচনী এলাকাগুলোতে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভোট হচ্ছে এমন তথ্যও জানেন না অনেক ভোটার। নির্বাচনে মেয়র পদে উত্তর সিটি আর দুই সিটির সম্প্রসারিত ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা উত্তর সিটির ২০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ জন ও সংরক্ষিত ৬টি ওয়ার্ডে ১ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৮টি ওয়ার্ডে ২৬ জন ও সংরক্ষিত ৬টি ওয়ার্ডে ১ জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। ফলে, চূড়ান্তভাবে ডিএনসিসিতে ২০টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১২০ জন এবং ৬টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৪ জন। আর ডিএসসিসি’র ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১২৩ জন এবং ৬টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২৪ জন।

সব মিলিয়ে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে ৩৮টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ২৪৩ জন। দুই সিটিতে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৬৮ জন।

প্রসঙ্গত, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৫৪ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ২২ হাজার ৭২৬ ও নারী ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৪। আর উত্তরে নতুন করে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে ভোটার ৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৪। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫ ও নারী ২ লাখ ৮২ হাজার ৬৪৯।

দক্ষিণের ১৮ ওয়ার্ডে ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১০। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৬ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৪।

দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে এবার মোট মেয়র প্রার্থী ৫ জন। আওয়ামী লীগ থেকে আতিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি থেকে শাফিন আহমেদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে আনিসুর রহমান দেওয়ান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহীন খান ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রহিম।

এদিকে ঢাকার দুই সিটির এই ভোটকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে কোনো আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। একই সঙ্গে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো না।

সরেজমিনে ঢাকা উত্তরের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে শুধুই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের ব্যানার-পোস্টার। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আতিকুল ইসলামকেও উত্তরের ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত মত বিনিময় করতে দেখা গেছে।

এদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র প্রার্থী ব্যান্ডশিল্পী শাফিন আহমেদের নির্বাচনী প্রচারণা তেমনটা চোখে না পড়লেও মানিকদী, মাটিকাটা, ইসিবি চত্বর, গুলশানে তার নির্বাচনী পোস্টার দেখা গেছে। অন্য তিন প্রার্থী যেন উধাও হয়ে গেছেন। না আছে তাদের কোনো পোস্টার, আ না আছে কোন প্রচারণা।

স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোটের মাঠে তারা শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই পেয়েছেন। বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে অন্য যারা আছেন তারা নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে খুব একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। তাই ভোট নিয়েও জনগণের মধ্যে আগ্রহ কম।

ঢাকা উত্তর সিটির মিরপুর এলাকায় বেশ কয়েকজন ভোটার জানান, কোনো প্রার্থী তাদের এলাকায় ভোট চাইতে যাননি। এলাকায় কোনো মিছিল মিটিংও হয়নি। তারা শুধু জানেন ভোট হবে। তবে কবে হবে নির্দিষ্ট তারিখ জানাতে পারেননি দিনমজুর এসব ভোটার।

একই সিটির মগবাজার মধুবাগ এলাকার বেশ কয়েকজন ভোটার জানান, শক্ত বিরোধী দল না থাকায় এই ভোট নিয়ে আগ্রহ নেই কারো।

এদিকে উত্তর সিটিতে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির মেয়র প্রার্থী শাহীন খান বলেন, নির্বাচন নিয়ে জনগনের কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

এর আগে, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়র আনিসুল হক মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। মেয়র পদে শূন্য আসনে উপনির্বাচন ও দুই সিটির ৩৬টি নতুন ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচন করতে ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ইসি ডিএনসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ১৭ জানুয়ারি এই নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি স্থগিতের আদেশ খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২২ জানুয়ারি ইসি নতুন তফসিল ঘোষণা করে।

প্রথমবার উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল কিন্তু ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২৮ ফেব্রুয়ারির এই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও তাদের সতীর্থরা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৬:৫৯ | মঙ্গলবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com