| রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ গুরুত্ব অনেক বেশি। এই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ। রয়েছে সায়েদাবাদ-গুলিস্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যাণ্ডও। নির্বাচনী হাওয়া বা আন্দোলনের গতি কোন দিকে তা দেখা ও জানার জন্য সারা দেশ তাকিয়ে থাকে ঢাকার ২০টি সংসদীয় আসনের দিকে। এরমধ্যে ১টি রয়েছে এই সংসদীয় আসনে। ঢাকার ২০ আসনের নৌকার টিকেট পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন সম্ভ্যাব প্রার্থীরা।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এসব আসনে কাদের প্রার্থী করছে তা জানার আগ্রহও প্রবল সারা দেশের মানুষের। জানা গেছে, ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১০টি আসন রয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিনে। এই আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংসদীয় আসনগুলোতে নির্বাচনের আগেই ভোটারদের মনজয় করে নৌকার টিকেট পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন সম্ভ্যাব প্রার্থীরা। এসব প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান সংসদরাও বসে নেই।
ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সালমা ইসলাম। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানকে পরাজিত করে সালমা ইসলাম নির্বাচিত হন। এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবদুল মান্নান খানের পাশাপাশি ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের বেয়াই আবদুল বাতেন ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নাম আলোচনায় আছে। এ বিষয়ে আবদুল মান্নান খান বলেন, নেত্রীর কাছে সারা দেশের খবর আছে। নেত্রী আমাকে যেভাবে নির্দেশ দেবেন আমি সেভাবেই কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।
ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর) আসনের বর্তমান এমপি খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এলাকার মানুষের জন্য তিনি ভালো কাজ করেছেন। এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম রাজিব এবং সাবেক আরেক ছাত্রনেতা ফকরুল আলম সমর। ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীন আহমেদ এবার এ আসন থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন। বিশেষ করে শাহীন আহমেদ মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলের হাই কমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে। ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনটি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এ আসন থেকে এবার আওয়ামী লীগের
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে মাঠে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেন। তিনি এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ ও কর্মী সভার পাশাপাশি জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ড্রেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মতো সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।
ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. আওলাদ বলেন, আমি ঢাকা-৪ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার মানুষের কল্যানে আজীবন কাজ করে যেতে চায়।
ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনের বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়ায় একাদশ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন তিনি। সেই ক্ষেত্রে তার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল মনোনয়ন পেতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে তিনি ঢাকা-৫ নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদিন ওঠান বৈঠক ও সরকারের উন্নয়নমুলক চিত্র তোলে ধরে সভা-সমাবেশ করছেন। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাইছেন। পাশাপাশি যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন-উর রশীদ মুন্নার নামও শোনা যাচ্ছে। ঢাকা-৬ (সূত্রাপুর-
কোতোয়ালি, গে-ারীয়া ও আংশিক বংশাল) আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ। এখানকার বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ। এ আসনে ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু নৌকার মনোনয়ন চান। এলক্ষে তিনি প্রতিদিন পাড়া-মহল্লায় ওঠান বৈঠক-আলোচনা ও মতবিনিময় সভা করে আসছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূল কর্মকা- ঢাকা-৬ আসনের ভোটারদের কাছে তোলে ধরে আবারো নৌকায় ভোট চাচ্ছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সারাজীবন দলের জন্য কাজ করছি। আগামীতেও এর ধারাবাহিকতা থাকবে।
ঢাকা-৭ (লালবাগ-চকবাজার) আসনের বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এ আসনে মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন। তবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। তিনি বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) যা বলবেন তার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনের বর্তমান এমপি বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন আগামী নির্বাচনেও এ আসনে মনোনয়ন চান। তবে এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন স¤্রাট। ইতোমধ্যে স¤্রাট এই আসনের ভোটারদের মন জয় করে বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠানে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের কাছে সরকারের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরছেন। ঢাকা-৯ (মুগদা-সবুজবাগ) আসনে একক প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। এ আসনে আওয়ামী লীগের আর কোনো প্রার্থী নেই। ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি) আসনের একক প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি। আমাদের সময়.কম
Posted ১৫:০৬ | রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain