বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূসের প্রশংসা করায় অর্থমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

  |   শনিবার, ০৪ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট

ড. ইউনূসের প্রশংসা করায় অর্থমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্রতা বিমোচন হয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের প্রশংসা করায় তার কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অর্থমন্ত্রী ক্ষুদ্রঋণের প্রশংসা করে বললেন, ক্ষুদ্রঋণের জন্য নাকি দারিদ্রতা বিমোচন হয়েছে। যদি এ কারণে দারিদ্রতা বিমোচন হতো তাহলে দারিদ্রতা ৬০ ভাগে কেন ছিলো? আর এখন কেন ২২ ভাগে নেমেছে? অর্থমন্ত্রীকে বলবো আপনি যদি হিসাব নেন তাহলে এর কারণ দেখতে পারবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গৃহীত নানা পদক্ষেপের কারণে দারিদ্রতা ২২ ভাগে নেমে এসছে। যেখানে অর্থমন্ত্রীও কমর্সূচি নিয়েছেন।’

শনিবার মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়নে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে সভাপতিত্ব করেছেন মহিলা লীগের সভাপতি আশরাফুননেসা মোশাররফ।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্রতা বিমোচন হয় না, লালন-পালন হয়। আর যারা ব্যবসা করে তারা সম্পদশালী হয়।’

তার বক্তব্যের সূত্র ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেখলাম মাননীয় অর্থমন্ত্রী ক্ষুদ্র ঋণের প্রশংসা করলেন। যারা ক্ষুদ্র ঋণ দেয়, তারা ধনশালী হয়। তারা ব্যবসা করে।তারা চায় না, মানুষ দারিদ্র্য থেকে উঠে আসুক। মানুষ দারিদ্র্য থেকে উঠে আসলে তারা ব্যবসা কী নিয়ে করবে।

আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি।গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করা নিয়েও মুহিতের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী এমন একজনের কথা বললেন, যার কারণে আমাদের পদ্মা সেতুর কাজ পিছিয়ে গেছে।তিন দশক আগে এরশাদ আমলে মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকার সময় ইউনূসের উদ্যোগে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়, যার অংশীদার হয় সরকারও।

বয়সসীমা অতিক্রম করায় কয়েক বছর আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে ইউনূসকে সরিয়ে দেওয়ার পর এই ব্যাংকটি নিয়ে তার সঙ্গে সরকারের টানাপড়েন চলছে।ইউনূসকে ‘সুদখোর’ বলেও বিভিন্ন সময় আখ্যায়িত করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মা বোনরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করে। আর লাভ নিয়ে যায় ক্ষুদ্র্রঋণের ব্যবসায়ীরা। যারা ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করে তারাও চায় না দারিদ্রতা থেকে তারাও ওঠে আসুক। তা করলে তাদের ব্যবসা থাকবে না। দুঃখ লাগে অর্থমন্ত্রী এমন একজনের প্রশংসা করলেন যার কারণে পদ্মাসেতুর কাজই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমেরিকা থেকে আমাকে বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে পদ্মাসেতুতে কোনও দুর্নীতি হয়নি। অর্থমন্ত্রীকে বলি দারিদ্রতা বিমোচন হয়েছে আওয়ামী লীগের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সামগ্রিক নিরাপত্তা কাজ যখন শুরু করলো তখনই দারিদ্রের হার কমেছে। ৫ কোটি মানুষ আজ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে ওঠে এসেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পুরস্কৃত হয় আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তিরস্তৃক হয়।’

সম্মেলনে আসা নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে নারীরা এসেছেন। তাদের বলবো, জঙ্গিবাদ একটি বিশ্বব্যাপী উপসর্গ। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের সঙ্গে মেয়েরাও সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। মেয়েরা মায়ের জাত। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষ খুন করে কিভাবে ইসলাম কায়েম হবে জানি না। মেয়েদের বলবো, আপনাদের ছেলে-মেয়রা কি করে, কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে, স্কুল-কলেজে যাচ্ছে কিনা এগুলো ভালো করে খোঁজ-খবর রাখবেন। সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় বন্ধু হবেন মা। সন্তান যেন মন খুলে সব কথা বলতে পারে সে সম্পর্ক স্থাপন করেন। সন্তানরা মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুধু শাসন নয়, আদরও করতে হবে। আমি অবাক হই যখন উচ্চ বিত্ত পরিবারের সন্তানরা জঙ্গিবাদ ও সন্তানের পথে যাচ্ছে। সবই পেয়ে গেছে বলে কি তারা বিপথে চলে যাচ্ছে? এক্ষেত্রে সন্তান যাতে বিপথে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা।’

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:০৬ | শনিবার, ০৪ মার্চ ২০১৭

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com