বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাকসু নির্বাচন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাবি প্রশাসনের আপিলের আবেদন

  |   সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | প্রিন্ট

ডাকসু নির্বাচন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাবি প্রশাসনের আপিলের আবেদন

২৮ বছর ধরে আটকে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ছয় মাসের মধ্যে করতে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে ঢাবি প্রশাসন। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করতে প্রশাসন কাজ করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্রিয়াশীল’ ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমনটা জানানোর দিনই আপিল আবেদন করে ঢাবি প্রশাসন।

সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল রবিবার ঢাবি কর্তৃপক্ষের লিভ টু আপিলের বিষয়টি সোমবার সাংবাদিকদের জানান রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি জানান, আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আছে। সোমবার অথবা মঙ্গলবার শুনানি হতে পারে।

১৯২১ সালে উপমহাদেশের প্রথম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সৃষ্টি হয়। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মোট ৩৬ বার এ নির্বাচন হয়েছিল।

ডাকসু বিধান অনুযায়ী প্রতিবছর নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। প্রায় ২৮ বছর আগে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের এ ব্যর্থতার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৬ জুন। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে তিন দফায় তফসিল ঘোষণা করলেও হয়নি নির্বাচন। ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু হলে ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন তাজ খুনের পর একটি তদন্ত কমিটি ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার সুপারিশ করলেও সেই ছয় মাস আসেনি এখনও।

২০০৫ সালের মে মাসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার উপাচার্য এস এম এ ফায়েজ ওই বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো নড়েচড়ে বসে। ছাত্রদল ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে একাধিকবার মিছিল সমাবেশ এবং ভিসির কাছে স্মারকলিপিও দেয়। তবে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো এগিয়ে আসেনি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তখনকার উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দায়িত্ব নেয়ার পরই নির্বাচন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও ঘোষণা অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ হন।

গত বছরের ৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ডাকসু ইলেকশন ইজ মাস্ট, তা না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’

তবু নির্বাচনের উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি। আর ২০১২ সালের একটি রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে গত ১৭ জানুয়ারি ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

কিন্তু সাত মাসেও নির্বাচনের কোনো আয়োজন দৃশ্যমান না হওয়ায় গত ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিশ পাঠান রিটকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তবু উদ্যোগ না নেয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর উপাচার্যযসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়।

এরপর গতকাল রবিবার উপাচার্য বসেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ‘আমরা সব সময়ই ডাকসু নির্বাচন চাই। বর্তমান ভিসি আমাদেরকে জানিয়েছেন আগামী মার্চে ডাকসু নির্বাচন হবে।’পরে ভিসিও সাংবাদিকদের এমনটিই জানান। ভিসির এমন বক্তব্যের দিনই হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে ঢাবি প্রশাসন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৪:১৪ | সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com