গণআন্দোলনে ভীত হয়ে এবং গণঅভ্যুত্থান ঠেকাতেই জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

রবিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিতবিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি।

বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর কারওরান বাজার থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাতিরঝিল মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ইব্রাহিম খলিল, জিল্লুর রহমান, কুতুব উদ্দিন, নোমান আহমেদী, ইউসুফ আলী মোল্লা ও ছাত্রনেতা সালাহউদ্দিন প্রমুখ।

ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য নতুন করে তামাশা ও ভাঁওতাবাজির নির্বাচন করার জন্য দিবাস্বপ্নে বিভোর। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তারা নতুন করে বিরোধী দলের ওপর দলন-পীড়ন শুরু করেছে। স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও রাজপথে সভা-সভাবেশ প্রত্যেকের নাগরিক সাংবিধানিক অধিকার হলেও সরকার পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে জনগণকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। সরকার বিরোধী শিবিরকে নেতৃত্বশূন্য করে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্যই সরকার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে।’

তিনি জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কারারুদ্ধ সকল আলেম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।

ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘সরকার পতনাতঙ্কে এখন অপমৃত্যুর প্রহর গুণছে। তারা এখন অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে নানা ধরনের গুজব, মিথ্যাচার, ছলচাতুরী ও ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। তারা মিথ্যাচারকে জাতীয়করণ করার পর এখন বিদেশি কূটনীতিক ও সম্মানিত মেহমানদের নামেও নির্লজ্জ মিথ্যাচার শুরু করেছে। তারা মার্কিন মন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র নামে মিথ্যাচার করে বহির্বিশ্বে দেশ ও জাতির সম্মানহানি ঘটিয়েছে। তারা নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে আসন্ন সরকার বিরোধী আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করতে চায়। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র জনগণ কখনোই সফল ও স্বার্থক হতে দেবে না।’

ঢাকা মহানগরী উত্তরের জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গত ১৪ বছরে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে দফায় দফায় ১০ বার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। সরকার এই মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিমাসে দাম সমন্বয়ের নামে প্রকারান্তরে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পথ আগেই উন্মুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই গ্যাসের দাম আবারও বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসসঘাতকতার শামিল।

‘মূলত, সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও ভ্রান্তনীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে এবং জনজীবনে তীব্র সঙ্কট চলছে’ বলে মন্তব্য করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ সকল দ্রব্যমূলের চরম ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে যখন নাভিশ্বাস উঠেছে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় যখন লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন সরকারের এই গণবিরোধী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত রীতিমত ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’।’

এসময় তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।