| শুক্রবার, ০৩ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
ডেস্ক রিপোর্ট: ‘ছেলেদের খাইয়ে বড় করেছি। এখন ছেলেরা আমরারে খাওন দেয় না। তাই অন্ধ স্বামী ছমর আলীরে লইয়া ভিক্ষা করি। এমন আক্ষেপ কাজল আক্তার খাতুন ওরফে কাজল রেখার। এই অসহায় দম্পতির বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। সরকারি বিভিন্ন সহায়তা থেকে বঞ্চিত বৃদ্ধাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়ায় তার ভাগ্যে জুটেছে বয়স্কভাতা।
ঈশ্বরগঞ্জের জাটিয়া ইউনিয়নের বাঁশাটি গ্রামের বাসিন্তা শতবর্ষী ছমর আলী ও সত্তর বছরের কাজলা আক্তার খাতুন ওরফে কাজল রেখা। তিন ছেলের জনক ছমর আলী। বড় ছেলে হাফিজ নিজের ছেলেদের উপার্জনে চলেন। রাব্বানী করেন দিনমজুরি। আর ফাইজুল স্ত্রী সন্তান নিয়ে গার্মেন্টে কাজ করেন। ছমর আলী ও কাজল রেখা দম্পতির এখন জীবনের ক্রান্তিলগ্ন। ছেলেরা সব ব্যস্ত তাদের সংসার নিয়ে। মা-বাবাকে দেখার সময় নেই তাদের। তাই স্বামী-স্ত্রীর ভাত জোটাতে নেমেছেন ভিক্ষা বৃত্তিতে। বৃদ্ধ বয়সে কাজ করার সামর্থ্য না থাকায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাত পাতেন অসহায় দম্পতি।
অসহায় ছমর আলী ও কাজল রেখা প্রতিদিন ভোরে ছোটেন মানুষের সাহায্যে পেটের খিদে নিবারণের জন্য। পেটের খিদের সঙ্গে বার্ধক্যের নানা অসুখও সামলাতে হাচ্ছে তাদের। এর মধ্যে গত ৬ মাস আগে ছমর আলী চিকিৎসার অভাবে চোখের আলো হারিয়েছেন। এখন স্ত্রীর চোখে দেখেন পৃথিবীর আলো। কাজল রেখা স্বামীকে পথ দেখিয়ে প্রতিদিনি ছোটেন নিরন্তর। কয়েকদিন আগে কাজল রেখা ও ছমর আলীর অসহায়ত্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেই পোস্টটটি দৃষ্টিপাত হয় উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের। ওই অবস্থায় কাজল আক্তার খাতুনের নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ করার ব্যবস্থা করেন জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বৃদ্ধার হাতে হস্তান্তর করা হয় বয়স্কভাতার কার্ড। সেইসঙ্গে ভিক্ষুক পরিবারটিকে একটি রিকশা কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন।
জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হচ্ছে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাকে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবেও বৃদ্ধ ছমর আলী ও কাজল রেখাকে তিনি সহযোগিতা করবেন। সমকাল।
Posted ১২:৫৪ | শুক্রবার, ০৩ আগস্ট ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain