| বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৮ | প্রিন্ট
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে অভ্যর্থনা জানাতে বুধবার শিক্ষার্থীদের এভাবেই লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি ঃ গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ অব্যাহত আছে।
১৮ এপ্রিল বুধবারও নির্বাচন উপলক্ষে নগরীর কানাইয়া, বালুচাকুলী ও নীলেরপাড়া এলাকায় জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রকাশ্যে বাধ্যযন্ত্র বাজানো, মাদ্রাসা ও প্রাইমারি স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানানো, মোটরসাইকেল শোডাউন, মঞ্চে এবং বিভিন্ন সড়কে নৌকা প্রতীক ব্যবহার করা হয়।
আচরণবিধি ভেঙে একই মঞ্চে বক্তব্য দিয়েছেন গাজীপুর মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ বেনজীর হোসেন, বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সামসুল আলম অরুণ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ জান্নাতুর রহমান জান্নাত।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে বারবার শতর্ক করার পরও কিছুতেই মানছেন না কোনো মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী।
২৮, ২৯ ও ৩০ ওয়ার্ডের নিয়োজিত সহকারী রিটার্নিং অফিসার তানিয়া আক্তার জানান, কানাইয়া এলাকায় এক মেয়র প্রার্থীর সমর্থনে প্রকাশ্যে প্যান্ডেল বানিয়ে দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও কবর জিয়ারতের একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি।
পরে তাৎক্ষণিক আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফোর্সকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা ওই এলাকায় গিয়ে প্যান্ডেল ভেঙ্গে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু কী কারণে যায়নি ওই বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেনি। বুধবার কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আসন্ন সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদপ্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থনে তার নিজ গ্রাম কানাইয়াবাসীর উদ্যোগে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
সকাল থেকে এলাকাবাসী সুসজ্জিত হয়ে ওই দোয়া মাহফিলে সকাল থেকে জড়ো হতে থাকে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কানাইয়া দারুসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীদের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে অভ্যর্থনা জানাতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখতে দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, ওই প্রার্থীর সমর্থনে দোয়া মাহফিলে ব্যান্ডপার্টির সদস্যদের বাধ্যযন্ত্র বাজিয়ে ও মোটরসাইকেলে শোডাউন করতেও দেখা গেছে।
নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে তার ছবি ও দলীয় নৌকা প্রতীক সংবলিত লিফলেট নিয়ে কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় বিলি করছে। লিফলেটটির একপাশে প্রার্থীর ছবি ও দলীয় প্রতীক এবং অপর পাশে নির্বাচনী ইশতেহার লেখা আছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রবীণ আলী আকবর (৬০) জানান, ‘মিলাদের কথা শুইনা নাতিরে নিয়া আইলাম।
অহোন দেহি ঢোল পেটায়।’ কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, দোয়া মাহফিলের আয়োজন বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয়। এতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। অপরদিকে কানাইয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও আওয়ামী লীগের মনোনীত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জান্নাতুর রহমান জান্নাতের সহধর্মিণী মোসাঃ লুৎফুন্নাহান বলেন, জাহাঙ্গীর আলম আমাদের কানাইয়া গ্রামের সন্তান। গ্রামবাসী তাকে অভ্যর্থনা জানাবে।
এর জন্য এখানে এই স্কুলের মাঠ ছাড়া কোথাও এমন জায়গা নেই। তাই স্কুল কমিটির অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে মাঠ ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছি। একই দিন পার্শ্ববর্তী নীলেরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন একই ধরনের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন জাহাঙ্গীর আলম।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, এসব ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা আইনগত ব্যবস্থা না নিলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, ‘এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে খোঁজখবর নিতে বলেছেন।’ গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ডঃ দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, ‘এ ধরনের একটি সভার ব্যাপারে খবর পেয়েছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Posted ১৫:৫৯ | বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৮
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | admin