বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭, বাড়িছাড়া আরও ১০ হাজার

  |   শনিবার, ১৫ মে ২০২১ | প্রিন্ট

গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭, বাড়িছাড়া আরও ১০ হাজার

ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস ও ইসরায়েল সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাত গড়িয়েছে ষষ্ঠ দিনে। গত রোববার (০৯ মে) থেকে শুরু হওয়া উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ গেছে ১৩৭ জনের, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও নারী আছেন।

 

এদিকে ইসরায়েল সেনাবাহিনীর টানা বিমান হামলা ও গোলার আঘাত থেকে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে শরনার্থী শিবির ও জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছেন গাজার ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। ইতোমধ্যে এই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিমান হামলা ও গোলার আঘাতে শনিবার সকাল পর্যন্ত সেখানে মারা গেছেন মোট ১৩৭ জন, তাদের ৩৬ জনই শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৯২০ জন।

 

মধ্যপ্রাচ্য, আরব লীগ, জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হামাস ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী— দু’পক্ষকে ইতোমধ্যে কয়েকবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে কোনো পক্ষের মধ্যেই যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার ইচ্ছা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যা ই করছে, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে করছে।

 

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজার প্রধান রাজনৈতিক হামাসের মিলিশিয়া বাহিনী এখনও ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে অব্যাহত রেখেছে রকেট হামলা। দেশটির সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের হয়েছেন ৯ জন।

 

এদিকে গাজার এই অশান্ত পরিস্থিতির ঢেউ লেগেছে ফিলিস্তিনের অপর অংশ পশ্চিম তীরেও। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন ১১ ফিলিস্তিনি।

 

অবৈধ দখলদারিত্বের প্রতিবাদে গত ৯ মে রাতে আল-আকসায় মসজিদে শবে কদরের (লায়লাতুল কদর) নামাজ আদায় শেষে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। স্বাভাবিকভাবেই তা দমাতে তৎপর হয়ে ওঠে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

 

এ সময় বিক্ষোভকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যকার সংঘাতে আহত হন অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি। সংঘাতের পর থেকে আল-আকসা মসজিদ ও এর সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রেখেছিল ইসরায়েলি পুলিশ।

 

এর জেরে ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস হুমকি দেয় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারকে। হামাসের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলা হয়, ১০ মে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ চত্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিণতির জন্য ইসরায়েল সরকার দায়ী থাকবে।

 

ইসরায়েল এই হুমকিকে আমল না দেওয়ায় ১০ মে সন্ধ্যার পর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। সেই হামলা এখনও অব্যাহত আছে। ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে দেড় হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস।

 

হামাসের রকেট হামলায় ইসলায়েলে এ পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত একটি জ্বালানি কোম্পানির পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পাইপলাইনে রকেট আঘাত হানার পর আগুন ধরে যায়।

 

এদিকে, হামাস রকেট হামলা শুরু করার অল্প কিছু সময় পর থেকেই গাজায় ফিলিস্তিনি ঘণবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী, যা এখনও চলছে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সাত সপ্তাহের যুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে বড় ধরনের সংঘাত হচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৩:৫৪ | শনিবার, ১৫ মে ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com