| শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে কোনো আইনি বাধা নেই। বাধা একজনই, তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী।’
শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের (এ্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, কি আর বলবো? প্রধানমন্ত্রী সম্রাটের মতো দেশ চালাচ্ছেন। রাজা, সুলতানা। ওনার আবার মন্ত্রীরা আমির-ওমরার মতো দায়িত্ব পালন করছেন, কথাবার্তা বলছেন। সুলতানা যা বলেন, ওটাকে আরও বাড়িয়ে বলতে হয় মন্ত্রীদের। তা না হলে ওনাদের আমিরগিরি, ওমরাহগিরি থাকে না।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে কেন ডাকা হয়নি প্রশ্ন করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, পাকিস্তান আছে, মালদ্বীপ আছে, বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি কেন? শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, আমি গণতন্ত্র দিয়েছি, মানুষের ভাতের ব্যবস্থা করেছি। তাহলে আপনাকে ডাকেনি কেন? এই প্রশ্নতো মানুষের মুখে মুখে। কারণ তারা জানে আপনার গণতন্ত্র এটা প্লাস্টিকের গণতন্ত্র, কচুপাতার পানির গণতন্ত্র। সামনে গেলেই টপ করে পানি পড়ে যায়। সেজন্য আপনাকে ডাকেনি। এটা আপনি না বুঝলেও সারাবিশ্ববাসী জানে।
তিনি বলেন, দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক যারা রয়েছেন তাদের কথাবার্তা তারা কিছুই মনে করেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীকে মনে করেন, তিনি সবচেয়ে বড় মেডিসিনের ডাক্তার। ওবায়দুল কাদের মনে করেন তিনি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সার্জন। আর হাছান মাহমুদ সাহেব মনে করেন তিনি হলেন গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজির একজন বিখ্যাত অধ্যাপক।
রিজভী বলেন, একজন অসুস্থ রোগী, চিকিৎসকরা প্রেস কনফারেন্স করে তার সামগ্রীক শারিরীক অবস্থা বলছেন। কিন্তু হাছান মাহমুদ সাহেব উল্টা বলছেন। তাকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে সূচক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উনি উত্তর দিচ্ছেন, কত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে। তিনি বললেন, খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যাথা আর পেটের ব্যাথার ওপর ভিত্তি করে কী স্বাস্থ্যের সূচক তৈরি হবে।
তিনি বলেন, শনিবারও (৪ ডিসেম্বর) অধিকাংশ গণমাধ্যমে রিপোর্ট করেছে খালেদা জিয়ার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখনও হচ্ছে, এটা আপনার কানে যায় না? বাংলাদেশে যদি এতই ভাল ডাক্তার থাকে তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবকে কেন সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল? বিশেষ বিমান চার্টার করে কেন তাকে পাঠিয়েছিলেন। সেদিন কেন বাংলাদেশের ডাক্তাররা বলেননি যে ওবাদুল কাদেরর চিকিৎসা বাংলাদেশেই হবে। আপনার এই স্ববিরোধীতা ও এক নায়কোচিত কতৃত্ববাদী আচরণের জবাব একদিন আপনাকে পেতেই হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আইনমন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, আইনি প্রক্রিয়া। কীসের আইনি প্রক্রিয়া। মোতাহার সাহেব তারেক রহমানের একটা মামলায় নিরপেক্ষভাবে রায় দিয়েছিলেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তারেক রহমানকে খালাস দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সহ্য করতে পারেননি। তাই ওই বিচারককে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, যখন প্রধান বিচারপতি সিনহা সাহেব আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী রায় দিচ্ছিলেন তখন কোনো সমস্যা হয়নি। যেই সংবিধান, আইন নিয়ে আপনার সঙ্গে মতভেদ তৈরি হলো, আইনের শাসনের বিরুদ্ধে আপনার যে অবস্থান, তার বিরুদ্ধে যখন প্রধান বিচারপতি কথা বললেন, তখন কীভাবে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন, বাংলাদেশের মানুষ কি ভুলে গেছে? গান পয়েন্টে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বের করে দিলেন- এটা কোন আইনের শাসন? আইনমন্ত্রী আপনি আইনি প্রক্রিয়া দেখান, এটা কোন আইনি প্রক্রিয়া?
Posted ১৫:২৫ | শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১
Swadhindesh -স্বাধীনদেশ | Athar Hossain