শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার কারাগারের দিনরাত্রি

  |   মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | প্রিন্ট

খালেদা জিয়ার কারাগারের দিনরাত্রি

ডেস্ক রিপোর্ট : বিটিভি দেখে, পত্রিকা পড়ে এবং ইবাদত-বন্দেগি করে কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সময় কাটে। রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়াকে প্রথমে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে রাখা হয়। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার ১৫ দিন আগে থেকে কারা বিধি অনুসারে ভিআইপি বন্দী রাখার জন্য পুরোনো কারাগারের ‘ডে-কেয়ার’ সেন্টারের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ডান পাশের দুটি কক্ষ থাকার উপযোগী করে তোলা হয়। আগে এখানে বন্দীদের সন্তানদের রাখা হতো। এর মধ্যে একটি কক্ষে লাগানো হয় নতুন টাইলস, সিলিং ফ্যান। বসানো হয় খাট, চেয়ার ও টেবিল এবং বিটিভি সংযোগ দেওয়া হয় সেখানে। ১১ ফেব্রুয়ারি ডিভিশন (প্রথম শ্রেণির বন্দী হিসেবে বিশেষ সুবিধা) পাওয়ার পর সেখান থেকে খালেদা জিয়াকে বন্দীদের সন্তান রাখার স্থান ডে-কেয়ার সেন্টারে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁকে পড়ার জন্য একটি দৈনিক পত্রিকা দেওয়া হয়।

একাধিক কারা কর্মকর্তা জানান, খালেদা জিয়া ঘুম থেকে উঠে সকালের নাশতা হিসেবে রুটি ও সবজি খান। কারাগারে প্রতিদিন তাঁকে একটি দৈনিক পত্রিকা দেওয়া হয়। সেটি তিনি পড়েন। এরপর গোসল করেন, পরে জোহরের নামাজ পড়েন। জোহরের নামাজ শেষে তিনি অজিফা পড়েন। তিনি ডে-কেয়ার সেন্টারের বারান্দায় পায়চারি করেন, পরে সেখানে কিছুক্ষণ চেয়ারে বসেন।

দুপুরের খাবার খান বিকেল চারটা থেকে সাড়ে চারটার দিকে। দুপুরে তাঁকে ভাত, সবজি, রুই বা আইড় মাছ খেতে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর বিটিভি দেখেন। এরপর রাতের খাবার খান। রাতে তাঁকে সবজি ও রুটি, মুগ ডাল খেতে দেওয়া হয়। কোনো কোনো দিন রাতে ভাত খেতে দেওয়া হয়। খাবার শেষে আবার খালেদা জিয়া বিটিভি দেখেন।

পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর খাবার রান্না করা হয়। রান্না করা এ খাবার প্রথমে উপকারাধ্যক্ষ ও কারাধ্যক্ষ খান। পরে চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালেদা জিয়াকে দেওয়া হয়। তিন বেলাই এসব নিয়ম মানা হয়।

কারা কর্মকর্তারা বলেন, খালেদা জিয়ার তত্ত্বাবধানের জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই আছেন। তিনি দিনে কর্তব্যরত নারী কারারক্ষীর কাছে থাকেন। ডাকা হলে তিনি খালেদা জিয়াকে ওষুধ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন। রাতে ঘুমান খালেদা জিয়ার পাশের কক্ষে। খালেদা জিয়ার সেবায় কারাগারের ভেতরে সার্বক্ষণিক একজন নারী ফার্মাসিস্ট, প্রয়োজন হলে একজন চিকিৎসক থাকেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় খালেদা জিয়ার কক্ষ ঘিরে একজন নারী উপকারাধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক চারজন নারী কারারক্ষী থাকেন। কারাগারের বাইরে আছেন একজন উপকারাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একদল কারারক্ষী। আরও আছেন পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া শান্ত ও চুপচাপ থাকেন। কারা কর্মকর্তাদের কাছে তিনি কোনো চাহিদার কথা জানান না। কিছু লাগবে কি না কারা কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় খোঁজ নিতে গেলে খালেদা জিয়া বলেন, প্রয়োজন হলে তিনিই জানাবেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি-প্রিজন) কর্নেল ইকবাল হাসান বলেন, ডিভিশন অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। প্রতিদিনই চিকিৎসক খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। খালেদা জিয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন বলে চিকিৎসকেরা তাঁদের জানাচ্ছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে। রায় ঘোষণার পরই সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে সেখানে রাখা হয়। প্রথম আলো

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২০:০৬ | মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com