মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিলে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হবেন: এমপি হারুন

  |   বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিলে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হবেন: এমপি হারুন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।

 

বৃহস্পতিবার  একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, আমি একাধিকবার সংসদ নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। আমি বলেছি, আজকে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক যে অবস্থা ওনাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার অনুমতি দিতে অসুবিধা কোথায়? আপনি তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগটি দিন। এতে আপনি সম্মানিত হবেন। দেশের মানুষ আপনাকে অবশ্যই সম্মান করবে। তার (খালেদা জিয়া) যে বয়স, তার যে অবস্থা এই অবস্থায় তাকে এইটা বিবেচনা করা উচিত।

 

হারুন বলেন, জাতীয় সংসদ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান জাতীয় সংসদে সরকারি দল, বিরোধী দল একাকার হয়ে গেছে। আমাদের পাশে বিরোধী দলের সদস্যরা রয়েছেন। উনারাই বলছেন, আমরা কাগজে-কলমে বিরোধী দল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেখানে লাঙল ছিল সেখানে নৌকা নাই। যেখানে নৌকা ছিল সেখানে লাঙল নাই। তাদের দায়বদ্ধতা আছে। সত্যিকার অর্থে জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এই সংসদ সেটি ঘটাতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যতে কী হবে আমি বলতে পারবো না। সত্যিকার অর্থে আজকে জাতি একটা গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। অবশ্যই রাজনীতি চর্চায় আমাদের ফিরে আসতে হবে। বিরোধী দলকে আজকে রাজনৈতিক কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।

 

হারুনুর রশীদ বলেন, উচ্চশিক্ষাঙ্গণ থেকে ডাক্তার হয়, ইঞ্জিনিয়ার তৈরি হচ্ছে কিন্তু রাজনীতিক তৈরি হচ্ছে না। কারণ সেখানে রাজনীতি নাই, রাজনীতির চর্চা নেই। যারা সামনের দিনে দেশকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেই মানুষগুলো আমরা তৈরি করতে পারছি না। যোগ্য মানুষ তৈরির প্রয়োজন অনুভব করছি না। এজন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের শিক্ষা পরিকল্পনা মোটেও যুগোপযোগী নয়। কোনো প্রচেষ্টা বা উদ্যোগ আমরা দেখছি না। একটা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ, কার্যকর পদক্ষেপ যদি আমরা নিতে না পারি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমরা নিদারুনভাবে বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়বো।

 

বিএনপির এই এমপি বলেন, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক সর্বস্তরে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। আশংকাজনকভাবে দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তার। শিক্ষাক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিভিন্ন নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস। এমসিকিউ পদ্ধতির মাধ্যমে জ্ঞানশূন্য প্রজন্মের বিস্তৃতি শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেউলিয়া থেকে আরও দেউলিয়ার দিকে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। জাতি হিসেবে আমরা সবদিক থেকেই যেন একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এই কথাগুলো বললে, আমাদের সরকার দলীয় সদস্যরা অনেকে কষ্ট পাবেন। সত্য সত্যিকার অর্থেই বড়ই কঠিন।

 

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে এর আগেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার রূপকল্প-২০৪১ সাল পর্যন্ত রয়েছে, দরকার কী নির্বাচনের নামে এ ধরনের প্রহসন? নির্বাচনের নামে এই ধরনের হানাহানি সংঘাত খুনোখুনি দরকার কী? আমার নির্বাচনী এলাকায় আগামী ৩০ তারিখ পৌরসভা নির্বাচন রয়েছে। কিছুক্ষণ আগে খবর পেলাম সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অফিস ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী কাজ করে? দায়িত্ব কী? আমরা নির্বাচন কমিশনকে সর্বদা গালিগালাজ করছি নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে সংবিধানে পরিষ্কারভাবে যে বলা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে রাষ্ট্র, আইনবিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ সকলেই যে নিরবচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা করবে। নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ যদি সহযোগিতা না করে আমি কীভাবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারবো?

 

হারুনুর রশীদ বলেন, আজকে যারা বিনাভোটে, নির্বাচন কমিশন যাদেরকে নির্বাচিত ঘোষণা করছে তাদেরকে আমি কী বলবো? অনির্বাচিত বলবো? না নির্বাচিত বলবো? তারা তো নিশ্চয়ই বিনাভোটে নির্বাচিত। এই সংবিধান আমাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দিচ্ছে ১১ অনুচ্ছেদে যে যারা সেখানে ভোটার তাদের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে হবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা ব্যর্থ। এই ক্ষেত্রে আমরা সত্যিকার অর্থেই ব্যর্থ। তৃণমূল পর্যায়ের একটি ইউনিয়ন পরিষদে এই বছরে তৃতীয়ধাপের নির্বাচন আগামী ৩০ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে। এ যাবত গণমাধ্যমে যে তথ্য এসেছে ৩০০/৪০০ অধিক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ও গোটা পরিষদ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। তাদেরকে কে নির্বাচিত করলো? কে তাদেরকে মনোনীত করলো? তারা কীভাবে জনগণের দায়িত্ব পালন করবে? এই কথাগুলো বলতে গেলে সরকারি দলের সদস্যরা আমাদেরকে বাধা দিচ্ছেন।

 

বিএনপি দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, আজকে আমরা আমাদের বিবেক, আমাদের মনুষ্যত্বকে হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের বিবেক, মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে হবে। সত্য যা সেটি আমাদেরকে বলতে হবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ, এটি আমরা বিশ্বাস করি। অবশ্যই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু আজকে আমাদের এই ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়ে গেছে। আমাদের গণতন্ত্রের সংকট, আমাদের আইনের সুশাসনের সংকট, আমাদের মাদকের যে ভয়াবহ বিস্তার ঘটছে এই সমস্ত সংকট থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গেলে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যমত্যের দরকার।

 

তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে বিভিন্নভাবে উপহাস করছেন, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। আমাদের দেশের এখন পঞ্চাশ বছর পূর্তি। আজকে চিন্তা করতে হবে যে রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে- নির্বাচন কমিশন বলি, আইন বিভাগ বলি, বিচার বিভাগই বলি আর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কথাই বলি এদের প্রতি জনগণের আস্থা বেড়েছে? না আস্থা কমে গেছে? এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা একেবারে তলানিতে চলে গেছে। আজকে যখন শুনি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা মানুষকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নাশকতার মামলা দেয়। রাজনৈতিক হাজার হাজার মামলা আজকে রয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১৫:৫৩ | বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১

Swadhindesh -স্বাধীনদেশ |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

Advisory Editor
Professor Abdul Quadir Saleh
Editor
Advocate Md Obaydul Kabir
যোগাযোগ

Bangladesh : Moghbazar, Ramna, Dhaka -1217

ফোন : Europe Office: 560 Coventry Road, Small Heath, Birmingham, B10 0UN,

E-mail: news@swadhindesh.com, swadhindesh24@gmail.com